জাদুসূঁচ, জাদুসূতো আর ...
যেন এক অকূল বর্ষণে ঝাপ্সা হয়ে মুছেযাচ্ছে সব
তোমার সন্ততিরা এইজন্মে ব্যর্থ হলো ছুঁয়েদিতে তোমার শৈশব।
তুমিও দেখোনি, হায়, ইতিহাসে মানচিত্রে শৈশব-পাঁচালী-পথ তোমার
পিতার
আবহ ও অভিজ্ঞতা দিয়ে অন্তরালে তবু কিছু অতর্কিতে ছুঁয়েগেছো তার...
অতঃপর চালচিত্র কীটদষ্ট, পরিপূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে
সুতরাং আবহ ও অভিজ্ঞতাগুলি
সন্ততিরা কোনোযুগে ঘুমঘোরে পাবেনা আবার ...
মনেপড়ে ইস্কুলের মাঠে একদিন
একজন জনহীন লোক এসেছিল
পাঁচহাত সাদা থানে রোগামোটা সূঁচ দিয়ে বুনে
এঁকেছিল লতাপাতা, ফুল, পশুপাখি –
তারপর জলিল স্যার, অপর্ণা ম্যাডামঃ
“ প্রত্যেকে আটানা করে নিয়ে এসো কাল –
জাদু সূঁচ, জাদু সূতো কিনে নিয়ে যাবে” ...
সে ইস্কুল, সেইমাঠ, সে বিকাল, সেইসব কথা ও কাহিনী
পুড়িয়ে নগরবাসী হয়েছো যে কবে
ভুলেগেছো, তবু অনুভবে
আজ বুঝি টেরপেতে পারো
মর্মকথা সে জাদু বিক্রেতা আর
জাদুসূঁচ, জাদুসূতো, অপর্ণা ম্যাডাম আর জলিল স্যারের?
এভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা ছিল
বৃক্ষহেন প্রতি মানুষের ...
নগর নাগর আজ। তুমি তার কিনেরাখা নষ্ট মেয়েছেলে।
তুমি দেখো দেবশিশুহেন শ্যামবর্ণ তোমার ছেলেটি
স্কুল থেকে ফিরে এলো, হাতে তার “ম্যাম্”দত্ত নোটঃ
“সাতশো টাকা মাথাপিছু নেওয়া হচ্ছে ক্লাশে –
শনিবারে আউটিং। ইনোভেটিভ্ ফিল্মসিটি।
আসা যাওয়া
শীততাপনিয়ন্ত্রিত বাসে”।
শনিবারে আউটিং। ইনোভেটিভ্ ফিল্মসিটি। আসা যাওয়া শীততাপনিয়ন্ত্রিত
বাসে –
হায়, এ সন্ততিগুলি জানবেনা দূরে আজো কোন্ মাঠে, ঝোপেঝাড়ে,
ঘাসে
হেঁটেযাচ্ছে একা এই যাদু সূঁচ ও সূতোর বিক্রেতা –
পাশে পাশে জলিল স্যার, দেবু স্যার, অপর্ণা ও শিবানী ম্যাডাম
–
সন্ধ্যা হচ্ছে, উলুধ্বনি, পরপারে এশা’র আজান ...
এদের কবর খুঁড়বে ইনোভেটিভ ফিল্মসিটি, ফ্ল্যাট্, পুল্ -
ঘুমঘোরে বিদ্যাধরী সাইরেনের গান ...