প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Tuesday, September 19, 2017

ছুরি

ছুরি

“দেশ” পত্রিকা সম্পূর্ণ অপাঠ্য হয়েযাওয়ার মোটামোটি এক দশক আগের কথা। অর্থাৎ ১৯৮২-৮৩ সাল। অর্থাৎ বয়ঃক্রম, অধমের দশ-এগারো। অতএব হাতে যা’ই পাই তা’ই গিলি। ‘আনন্দমেলা’, ‘শুকতারা’, ‘কিশোর ভারতী” – হুঁ – লোভ “দেশ”এর প্রতিও। কিন্তু সরাসরি বাধা না দিলেও আমার “দেশ”পাঠ বাবার যে খুব পছন্দ নয় তা টের পাই। তবু “অরণ্যদেব” কমিক্স আর খেলা নিয়ে লেখাগুলি পড়বার অনুমতি নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব অন্য সমস্ত লেখায় চোখ বুলিয়ে নিই। বিশেষ করে, অবশ্যই,  যেসব লেখার সঙ্গ ফোটো বা অলংকরন থাকে রগরগে।
সেই চুরিয়ে পড়া গল্পদের মধ্যে একটা গল্প, যা হয় সম্পূর্ণ পড়ার আগেই “দেশ” সংখ্যাটি হয়েছে হাতছাড়া বা হয়ত সময়ের নিজস্ব নিয়মেই মনেনেই শেষটা, সেই গল্পটির টুকরোকথা এখনো মনেপড়ে। যদি বিদেশী প্লট বেনামে টুকে লেখা নাহয়ে থাকে তাহলে, অন্ততঃ যতোদূর প্লটটি আমার মনে আছে তাতে লেখকের প্রতিভা বিষয়ে আমি নিঃসংশয়।
কাহিনীর আবহ সোনাগাছি অথবা তৎসম কোনো এক অঞ্চলের একটি বাড়ি। এই বাড়িতে যে মেয়েটি থাকতো সে খুন হয়েছে। বুকে ছুরি বিদ্ধ অবস্থায় তাকে পাওয়া গেছে সকালে। খবর শুনে মেয়েটির “রেগুলার বাবু”টিও এসেছেন। তাঁর জানামতে মেয়েটির অন্য কোনো “চোরাবাবু” বা “চোরাপ্রেমিক” নেই। তাহলে ...  এতোদূর পর্যন্ত কোনো মধ্যমেধার লেখকও লিখতে পারে। কিন্তু তারপর ...
বাবুটির মনে খটকা লাগছে। কয়েক বছর আগে “বাবু”টির পরিচিত আরেকটি মেয়ে খুন হয়েছিল একই ভাবে – ছুরিকাঘাতে। ঘটনাটি “বাবু”ই একে বলেছিলেন। এতে মেয়েটি অত্যন্ত উত্তেজিত ও উৎসাহিত বোধ করতে থাকে। সে নাকি কিছুদিন আগেও “বাবু”টিকে জিজ্ঞেস করেছে – ছুরিটা ঠিক কেমন ছিল, কেমন ছিল তার ফলা, বাট... শরীরের ঠিক কোথায়, কিভাবে বিদ্ধ হয়েছিল ছুরিটি ... সে নাকি প্রায়ই বলত নিশ্চয় কোনো গোপন প্রেমিকের ঈর্ষার ফল  এই ঘটনা । জানতে চাইত সেই খুনী ধরা পড়েছে কি’না। বলতো সে চায় তাকেও কেউ এভাবে, ছুরি দিয়ে খুন করে যাক ...
  মনে আছে এতোদূরই। ভুলেছিলাম অনেকদিন। যখন প্রথম দস্তয়ভস্কির “ইডিয়ট” সম্পূর্ণ  পড়ি ( প্রথমপাঠ তো সেই ফাইভ-সিক্সে, সুধীন্দ্রনাথ রাহা’র কিশোরপাঠ্য, অপূর্ব ‘দেব সাহিত্য কুটীর’ সংস্করনে) – তখন অর্থাৎ ৯০-৯১ সাল নাগাদ ওই গল্পটি আবার জেগে উঠলো মনে – হয়তো রোগোজিনের ছুরিতে নাস্টাসিয়া ফিলিপ্পোভনা’র হত্যাদৃশ্যই ওই গল্পটিকে মর্মে ফিরিয়ে এনেছিল। - সেইথেকে এখনো মাঝেমাঝেই মনেপড়ে গল্পটির কথা। - আমি নিজেকে আরো ১২ মাস সময় দিচ্ছি, সবাই সাক্ষী, যদি ওই গল্পটির সন্ধান না পাই তাহলে আমি নিজেই লিখব গল্পটা।

ঘুম ঘর