প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Sunday, January 7, 2018

পিছনে পায়ের শব্দ



পিছনে পায়ের শব্দ
পিছনে পায়ের শব্দ মুখ ফেরালেই
কেউ নেই,কিছু নেই
পিছনে পায়ের শব্দমুখ ফেরালেই 
নাগরিক রাত্রি কিংবা সরল খাঁর ধুধু দিঘি
অথবা জনতা
ভাসানের ভিড়হেন জনতাগর্জনে
তুমি,আমি, সে সখা,
সখি,দাসী, বাঁদী ,বিদূষক
মুখ ফেরালেই
কেউ নেই কিছু নেই
পাকা বাড়ি ,গলি,রাজপথ
দুবেলা আহ্নিক কিংবা
নিয়মিত সঙ্গমের মতো
পড়ে আছে আবিস্কারসম্ভাবনা হীন
তবু কে পিছনে আসে
খুনি কিংবা গার্ডিয়ান এঞ্জেলের মতো
প্রতিরাত্রে,প্রতিদিনে ,দুপুরে,বৈকালে
লক্ষ্য রাখে অপলক চোখে?
মুখ ফেরালেই ফের
মিশে যায় মাঠে ,পথে, জনতাশরীরে?
প্রতিটি বাঁকের মুখে আমি
বন্যার্ত বা উদ্বাস্তুর মতো
পিছনে তাকাই
           ফিরে ফিরে
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই,
আস্থা নেই মৃত্যু কিংবা পুনর্জীবনেও
অথচ নাস্তিক” শব্দে
বালখিল্য আশ্বাসের যুগ, টের পাই,
ভেসে গেছে নদীজলে কবে –
টের পাই সেই থেকে সমূহ নীরব
প্রশ্নচিহ্ন ,সকল বিস্ময়
দ্বিধার অপর পারে
 পেন্ডুলামের মতো দুলে দুলে
যখনই সুস্থির কোন ইঙ্গিতের কাছে
ন্যস্ত করবে ভেবেছে নিজেকে
তখনই পায়ের শব্দ – পুনরায় – পিছনের পথে –

অথচ
পিছনে শুধু সপ্রসঙ্গ পঙ্গু অতীত
কোনোমতে কুপী জ্বেলে
ভাত,ডাল,সজিনা চচ্চড়ি
রান্না করে অবলীল দৈব পাকঘরে –
তাহলে কে খুনি কিংবা ‘গার্ডিয়ান এঞ্জেলে’র মতো
পিছু নেয়? মুখ ফেরালেই
নিয়ত নিশ্চিহ্ন হয়
স্বদেশপ্রেমের মতো
নির্বাচন শেষে?
তবে কি এখনো কোনো
খেলা বাকী আছে আমাদেরো?
৩।
তবে কি এখনো কোনো
খেলা বাকী আছে আমাদেরো?
‘আমাদের’ শব্দ অবধি  যেতে গিয়ে দেখি
সাঁকো নেই,বন্দর,পারাপার নেই,
দ্বিবচন,একবচন নেই –
বহুবচনের মতো দিগন্তে ছড়িয়ে আছে
কর্মী সুধি,পদ্যকার নেতা ও জনতা –
কৈশোরের গণিকাভগিনী
সেও নেই সাম্রাজ্য বিস্তৃত এই
সম্পাদিত ইতিহাস-গ্রন্থ-প্রচ্ছদে...
 বাকি আছে কবে কার সাথে?
তাহলে আমার পিছে কে আসে এখনো
আমার ঘুমন্ত কিংবা নিদ্রাহীন রাতে?
৪।
তবে কি এখনো কোনো
খেলা বাকী আছে আমাদেরো?
তাস,পাশা,কপাডি অথবা
নৌকাদৌড়? ঘুড়িকাটাকাটি?
আঙ্গিনা,উঠান হয়ে মাঠঘাট,
হাঁটাপথ, মেধা ও মনন
কবেইতো কাটাকুটি-ছক হয়েগেছে।
গোপন টেক্কা নিয়ে জামার আস্তিনে
সব তাস জিতে কবে চলেগেছে একটি গোধূলি –
সে ম্যাজিক গোধূলির ডাকে
সমুদয় ঘুড়ি ও ফানুস
চিল, কাক, কবুতর হয়ে
উড়েগেছে চক্রবালপরিধি পেরিয়ে...
তবুও কি খেলা আজো
করতলরেখাহেন বাকী রয়েগেছে?
#
কোন্‌ খেলা বাকী আজো?
সে খেলায় কে আমার প্রতিপক্ষ আর
কে আমার সহযোদ্ধা? চতুর সারথি?
শুধুমাত্র এটুকু জানতে মুখ ফেরাতেই
কেউ নেই, কিছু নেই –
তাঁবু উপড়ানো মাঠে এলিবাইহেন
টুকরো টিকিট পড়েআছে।
৫।
তাঁবু উপড়ানো মাঠে এলিবাইহেন
টুকরো টিকিট পড়েআছে।
তবু কি এখনো কোনো খেলা বাকি আছে?
‘খেলা’,হয়, ক্রিয়াপদ,তবু ‘খেলা’ নামে
একটি যুবতী ছিল,হয়তোবা দুরগ্রামে -
হবিগঞ্জ অথবা সিলেটে ...
আমার ঠাকুরদা তাকে
কামনা করতেন কি না অথবা এ ‘খেলা’
ঠাকুর্দার সম্পর্কিত বোন ছিল কি না
সে সকল কথা এই কুশিয়ারা নদীও জানেনা।
যে নদী সমস্ত জানত সে আজ “খিলঞ্জিয়া”,
তার অজ্ঞাতবাসের ঠিকানা
দ্বৈপায়ন ব্যাসেরও অজানা।
তবে কি এ ‘খেলা’ তার শব্দরূপ ভেঙ্গে
ক্রিয়া হয়ে,ক্রিয়াপদ হয়ে,
ম্যাচ শেষে অপাংক্তেয়
বলের মতন
অপেক্ষায় থেকে থেকে একদিন নষ্টশশা হয়ে
উদ্বাস্তুর ঠিকানা পেয়েছে?
তাহলে আমার পিছে কে আসে এখনো
আমার ঘুমন্ত কিংবা নিদ্রাহীন রাতে?
৬।
তাঁবু উপড়ানো মাঠে এলিবাইহেন
টুকরো টিকিট পড়েআছে।
পড়েআছে শান্তিপর্ব, সংখ্যাতীত শব।
আদিপর্বে, সভাপর্বে
যারা ছিল দুঃসাহসী – জলদস্যুহেন –
আজ তারা ‘শিশিরে নীরব’।
তাহলে আমার পিছে কে আসে এখনো
আমার ঘুমন্ত কিংবা নিদ্রাহীন রাতে?
পিছনে পায়ের শব্দ
মুখ ফেরালেই
কেউ নেই,কিছু নেই
তবে কি প্রেরণা আসে?  
মুখ ফেরালেই 
নাগরিক রাত্রি কিংবা সরল খাঁর ধুধু দিঘি
অথবা জনতা
ভাসানের ভিড়হেন জনতাগর্জনে
তুমি,আমি, সে সখা,
সখি,দাসী, বাঁদী ,বিদূষক
মুখ ফেরালেই
কেউ নেই কিছু নেই
তাঁবু উপড়ানো মাঠে এলিবাইহেন
টুকরো টিকিট পড়েআছে।
পড়েআছে শান্তিপর্ব, সংখ্যাতীত শব।
প্রকৃত শবের মতো আমারো শব্দগুলি
একদিন এভাবেই
পচে গলে যাবে?
আমি তাই প্রেরণার পিছে হেঁটে হেঁটে
চলে আসি সরল খাঁ’র দিঘি পার হয়ে।
প্রেরণা দেবীর মতো
বেদীতে আসীন হলে পরে
নতজানু আমি তার যোনির সকাশে
ভিক্ষা চাই আক্ষরিক উত্তরাধিকার –
তখুনি পায়ের শব্দ পিছনে, শিশিরে –
ভেঙ্গে যায় প্রেরণার কাছে
জন্মপ্রাক্‌ সব অঙ্গীকার...
তবু কে পিছনে আসে
খুনি কিংবা গার্ডিয়ান এঞ্জেলের মতো
প্রতিরাত্রে,প্রতিদিনে ,দুপুরে,বৈকালে
লক্ষ্য রাখে অপলক চোখে?
মুখ ফেরালেই ফের
মিশে যায় মাঠে ,পথে, জনতাশরীরে?

৭।
যদিও গহনে আমি গোপনে জেনেছি
প্রেরণাও আসলে নশ্বর
তথাপিও কলি, ত্রেতা এবং দ্বাপরে
প্রেরণা আমাকে
দেখিয়েছে পূর্ণ শশী
একাধিক অমাবস্যা রাতে।
অবলুপ্ত নারী ও ঘুড়িরা
প্রেরণার জাদুবিদ্যাবলে
ফিরেছে বশংবদ পারাবত হয়ে
ঠোঁটে নিয়ে খড়কুটো –
পরাহত আকাশ, আঙ্গিনা –
ময়নাতদন্ত আমি করেছি তাদেরো।
অথচ তেমন খেলা মনে তো পড়েনা
যা আমি করিনি শেষ
মর্মাবধি নিজে না হেরেই ...
তবু কে পিছনে আসে
খুনি কিংবা গার্ডিয়ান এঞ্জেলের মতো
প্রতিরাত্রে,প্রতিদিনে,দুপুরে,বৈকালে
লক্ষ্য রাখে অপলক চোখে?
৮।
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই,
আস্থা নেই মৃত্যু কিংবা পুনর্জীবনেও
অথচ নাস্তিক” শব্দে
বালখিল্য আশ্বাসের যুগ, টের পাই,
ভেসে গেছে নদীজলে কবে –
সুতরাং
খুনি কিংবা এঞ্জেলদের আড়ালে নীরবে
আমার ধ্বংসের সব সীমা
মুছে দিও, গো প্রেরণা, যেভাবে শিশুরা
শ্লেট মোছে খামোখা খেয়ালে।
তবু যদি খুনি কিংবা গার্ডিয়ান এঞ্জেলের মতো
প্রতিরাত্রে,প্রতিদিনে ,দুপুরে,বৈকালে
বেজেওঠে পদশব্দ কোনো
তবে জেনো, গো প্রেরণা,
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই,
অদ্যাবধি আস্থা নেই
মৃত্যু কিংবা পুনর্জীবনেও
এবং নাস্তিক” শব্দে
বালখিল্য আশ্বাসের যুগ
দৃশ্যান্তরে আসেনি এখনো –







ঘুম ঘর