প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Sunday, January 28, 2018

বিবর্ণনির্জনের কবি


বিবর্ণনির্জনের কবি

১।
প্রতিটি ভাষাই হয় একেকটি বিভিন্ন সৈকত। প্রতি ভাষার প্রতিটি নুড়ি, যা শব্দ, তা অপর ভাষা’র সৈকতনুড়িটি হতে ভিন্ন। সংশ্রব, অন্তর্গত, নানা ক্ষেত্রে থেকে গেলেও, আরোও অন্তর্গততর অর্থে অনুবাদসম্ভাবনাহীন। Cosmos এই শব্দটিকেও আমি, মর্মে, শব্দানুবাদে অক্ষম বোধকরি আকৈশোর order of the universeশব্দবন্ধও, আমার মর্মে, হয়ে ওঠেনা Cosmos এর সমার্থক। সুতরাং বিশ্বব্রহ্মাভ, মহাবিশ্ব ,মহাজগৎ ইত্যাদি প্রতিশব্দকেও প্রত্যাখ্যান করতে আমি বাধ্যহই। বাধ্যহই কেননা Cosmos শব্দ মর্মশ্রবণে ধ্বনির যে নির্ঝরমুখ খুলে দেয় সেই নির্ঝরের প্রবাহ যে সমুদ্রে, বিশ্বব্রহ্মাভ, মহাবিশ্ব ,মহাজগৎ ইত্যাদি শব্দের ধ্বনিদের যে নির্ঝরমুখ তাদের প্রবাহ, পরিণাম অন্যতর সমুদ্রে। বরং “মহাবিশ্বে মহাকাশে মহাকাল-মাঝে, আমি মানব একাকী ভ্রমি বিস্ময়ে, ভ্রমি বিস্ময়ে” – এই পংক্তিটিই আমাকে দেয় প্রকৃত Cosmos-চেতনা। বিশ্বব্রহ্মাভ, মহাবিশ্ব ,মহাজগৎ ইত্যাদি শব্দের অতলে নেই ‘বিস্ময়’,‘একাকী’ আর মহাকালের ছায়াপাত যা আমার Cosmos-চেতনার প্রাথমিক উৎস।
“এখানে নাম্‌ল সন্ধ্যা। সূর্য্যদেব, কোন্ দেশে কোন্ সমুদ্রপারে তোমার প্রভাত হ’ল?
 অন্ধকারে এখানে কেঁপে উঠ্‌চে রজনীগন্ধা, বাসরঘরের দ্বারের কাছে অবগুণ্ঠিতা নববধূর মত; কোন্‌‍খানে ফুটল ভোরবেলাকার কনকচাঁপা?
 জাগ্‌ল কে? নিবিয়ে দিল সন্ধ্যায় জ্বালানো দীপ, ফেলে দিল রাত্রে-গাঁথা সেঁউতিফুলের মালা।
 এখানে একে একে দরজায় আগল পড়ল, সেখানে জান্‌লা গেল খুলে। এখানে নৌকো ঘাটে বাঁধা, মাঝি ঘুমিয়ে; সেখানে পালে লেগেচে হাওয়া”
কিংবা
“তোমারও নেই ঘর
আছে ঘরের দিকে যাওয়া।
...       ...    ...    ...  ...

গাছ বীজ হাড় স্বপ্ন আশ্চর্য জানা
এবং তোমার আঙ্কিক অমোঘ অবেদন
    আবর্তন

নিয়ে
কোথায় চ’লেচ পৃথিবী।
  আমারও নেই ঘর
আছে ঘরের দিকে যাওয়া”
এসকল উচ্চারণের Cosmos-চেতনার বিপ্রতীপে হলেও নিম্নোধৃত পংক্তিগুলিও,অবশ্যই, Cosmos-চেতনায়, অন্ততঃ আমার মর্মে, বিষণ্ণ-ভাস্বরঃ
One half of the earth lit by the sun, the other half black and spotted with fire, gas, resin or candle flame … In one place people are fighting, there are massacres; in another, there is an execution, in another a robbery … Below, men are sleeping, dying … the black ribbons of funeral processions winding towards toward the yew trees …    endless. And with all this on its back, how can the enormous earth go on hurtling through eternal space with the terrible rapidity of a lightning flash?

অথবাঃ
I was on a tower in the midst of the stars.

Suddenly, a stroke of vertigo, a lightning-flash …
… The riddle of the cosmos in all its depth made clear. …
…Where goes this mass that rolls
Bearing me on? – And I can die, die, take my leave
Knowing nothing.

কিংবা

Tonight I may die. Rain, wind, sun
Will scatter everywhere my heart, my nerves, my marrow.
All will be over for me . Neither sleep nor awakening.
I shall not have been out there among the stars.


এই যে Cosmos-চেতনা, এর কেন্দ্রে সজীব জিজীবিষার চেয়ে সুতীব্র মর্বিডিটিরই প্রাধাণ্য। এই কস্‌মিক মর্বিডিটি’র দেখা, Jules Laforgue ( জ্যুল লাফর্গ, ১৮৬০ – ১৮৮৭ ) এর পূর্বে দেখাযায় “হেম্‌লেট্‌” এঃ
There’s a special providence in the fall of a sparrow. If it be now, ’tis not to come. If it be not to come, it will be now. If it be not now, yet it will come—the readiness is all. Since no man of aught he leaves knows, what is ’t to leave betimes? Let be.
#
To be, or not to be, that is the question:
Whether 'tis nobler in the mind to suffer
The slings and arrows of outrageous fortune,
Or to take arms against a sea of troubles
And by opposing end them. To die—to sleep,
No more; and by a sleep to say we end
The heart-ache and the thousand natural shocks
That flesh is heir to: 'tis a consummation
Devoutly to be wish'd. 

অনুভব হয়, শেক্ষপীরের সময় থেকে উড়াল দিয়ে, পথিমধ্যে ইউরোপীয় কবিতাধারাকে যেন প্রায় অস্বীকার করেই এই এই কস্‌মিক মর্বিডিটি’র আবির্ভাব মাত্র সাতাশ বৎসরের আয়ু পাওয়া জ্যুল লাফর্গের চেতনায়। Jules Laforgue ( জ্যুল লাফর্গ, ১৮৬০ – ১৮৮৭ ) ফরাসী কবি আর তাঁর কবিতা কিভাবে এলিয়ট’কে নির্মাণ ও নিয়ন্ত্রণ করেছিল সে কাহিনীও রাষ্ট্র না হলেও প্রতিষ্ঠিত-পরাক্রান্ত। তথ্যে যাঁদের প্রয়োজন তাঁদেরকে “গুগুল্‌” সাজেস্ট করছি কেননা এই আন্তর্জাল বেষ্টিত কালে “গুগুল্‌” থেকে টুকে রচনার পেট ফাঁপানো কিংবা আপনাকে “জ্ঞানী” বলে জাহির দেবার ইচ্ছা মূর্খতা মাত্র। বরং “প্রভাব” বিষয়ে এলিয়ট সাহেবের বহু আলোচিত তথা উচ্চারিত পংক্তিগুলি এখানে প্রাসঙ্গিকঃ “Immature poets imitate; mature poets steal; bad poets deface what they take, and good poets make it into something better, or at least something different.”
এলিয়ট ঠিক কতটা mature উপায়ে আত্মসাৎ করেছিলেন জ্যুল লাফর্গ’কে এ’ও নানা গ্রন্থে বিশদ আলোচিত। [ উৎসাহী পাঠকবর্গ  এই আন্তর্জাল-সূত্রগুলি খুলে দেখতে পারেনঃ https://www.gresham.ac.uk/short/t-s-eliots-poetic-inspiration-jules-laforgue/  , http://dspace.pondiuni.edu.in/jspui/bitstream/pdy/336/1/T%25201551.pdf  ] আমার এই রচনা শুধুমাত্র আমার জ্যুল লাফর্গ পাঠের, অবশ্যই ইংরেজি অনুবাদে, অভিজ্ঞতার আংশিক বর্ণনপ্রচেষ্টা মাত্র।
জ্যুল লাফর্গ প্রথম পাঠ, আমার, ইংরেজি অনুবাদে ফরাসী কবিতার এক সংকলনে, ৯৬-৯৭ সালে, আমার যা-পাই তা’ই পড়ি যুগে। তখনকার জাব্দাখাতা ঘেঁটে দেখতে পাচ্ছি ‘In all senses, forever, the silence palpitates’ , লাফর্গের এই পংক্তিটি শুধু টোকা আছে কয়েক বছর পরে বাবু চিন্ময় গুহর এক পন্ডিতি রচনা, এলিয়ট বিষয়ে, পাঠান্তে আবারো উৎসাহী হয়েছিলাম লাফর্গতে ২০০০-২০০১ এর জাব্দা খাতার এন্ট্রি জানাচ্ছে সেই সময়ে এলিয়ট ঘেঁটে তাতে লাফর্গের ছায়ারেখার অনুসন্ধানই ছিল মূল কয়েকদিন আগে
Patricia Terry অনুদিত Poems Of Jules Laforgue হাতে আসায় আবার মগ্ন হলাম লাফর্গে।

২।
 Patricia Terry অনুবাদ হয়তো মূলানুগ তবে Vernon Watkins, Kate Flores, William Jay Smith বা   Joseph Bennett এর অনুবাদের তুলনায় , অন্ততঃ আমার পাঠকচৈতন্যে, অনুবাদে যতটা সম্ভব ততোটাও কবিতাহয়ে ওঠেনি সর্বত্র তথাপি যেহেতু ফরাসী ভাষা জানিনা, যেহেতু অন্য কোনো গ্রন্থ পাইনি এতাবৎ, যাতে, লাফার্গের এতগুলি কবিতার অনুবাদ রয়েছে তথাপি লাফার্গের সঙ্গে পূর্ব পরিচিতিহেতু, সশ্রদ্ধ মুগ্ধতাহেতু, মনেহয়, কবিকে অনুসরনে সক্ষম হয়েছি সামান্য হলেও আর যতোই কবির মনীষার ছায়াপথের ইঙ্গিতপথে হয়েছি ধাবিত ততোই জেনেছি এই কবি, মর্মে, আধুনিকতার একজন হ্যামলেট টের পেয়েছি তাঁর মর্মঋতু শরৎ কিংবা বরফ গলানো গ্রীষ্ম তাঁর সমগ্র কথোপকথন এমন এক ওফেলিয়ার সঙ্গে যাকে শেক্ষপীরের হ্যামলেঠেনই দ্বিধাগ্রস্থ প্রত্যাখ্যান সত্ত্বেও তাঁর কবিমনীষা মূলতঃ নিবেদিত তার কাছেই হেমলেট নাটকের তৃতীয় অঙ্কের, প্রথম দৃশ্যের হ্যামলেটের উক্তি, ওফেলিয়ার প্রতি Get thee to a nunnery: why wouldst thou be / a breeder of sinners? I am myself indifIerent / honest; but yet I could accuse me of such / things, that it were better my mother had not / borne me. We are arrant knaves, all; believe / none of us. Go thy ways to a nunnery.’ কবি নিজে উদ্ধার করেছেন তাঁর    ABOUT A DEFUNCT LADY’ বিভাবে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে Get thee to a nunnery উচ্চারণ – কখনো  নিজবেশে, কখনো ছদ্মবেশে উহ্য রয়েগেছে সেই কসমিক-মর্বিড উচ্চারণ, হ্যামলেটেরঃ What should such fellows as I do crawling between earth and heaven?
স্বর্গের অভিশাপ আর মর্ত্যের করুণা - নাকি  মর্ত্যের অভিশাপ আর স্বর্গের করুণা? – এই ধাঁধার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অসহায় লাফার্গে লিখেছেনঃ Where is Sakya now, chaste heart and too sublime,
Who bled for the world and spoke the worthy Law?
And Jesus, sad and gentle, who doubted the Faith
By which he had lived, whose victim at last he died?
All those tormented by the atrocious quest,
Their madness, their books' un fathomed emptiness?
And all the unknown and humble who silently bled!
But sleep; it's over now. Eternally, sleep.
o vast convocation, magnificent suns . . .

#
Eternally sleep; it's done. Believe if you will
The whole fantastic drama an evil dream.
You have become a tomb which aimlessly wanders
... nameless within the unremembering darknessIt
was a dream! Oh no, you never lived!









ঘুম ঘর