“পূরবী"
জাহাজ থেকে জাহাজ। বন্দর থেকে বন্দর।
হারনা-মারু, আন্ডেস্, লিসবন …
নীল দিন, গড়িয়ে গিয়ে রাত, চাঁদঢালা।
চাঁদের কুহক ছিঁড়ে
ঝড়, কোনোদিন, হেউঢেউ, অন্ধকার
মধ্যদিনেই। অপর বন্দর
ঝিলিমিলি, শান্ত
সন্ধ্যারাগে।
যে রাতে মাতাল চাঁদ,
যে রাতে ওঠেনি চাঁদ
সিন্ধুপারে, হয়তো তখনো …
নোনা জলে ধোয়া নীল দিনে,
ঢেউএর ফেনার মতো ধূসর দুপুরে,
গোধূলিতে,বিকালে, সন্ধ্যায়,
টের পাওয়া যায়
পদপাত
জাহাজ থেকে জাহাজে। বন্দর থেকে বন্দরে।
কার?
কোন বীজ ক্রমে মহীরূহ
চৈতণ্যের,চেতনার
“মোহিনী আড়ালে"?
#
যেন কেউ প্রতীক্ষায় রয়েছে বন্দরে।
#
দু'হাজার চব্বিশ থেকে ঊনিশশো চব্বিশের
দিকে
যাত্রীজাহাজ নয়, একখানি খেয়া নৌকা
এগিয়ে চলেছে
অক্ষরে, শব্দে, যতিতে
যেন কেউ প্রতীক্ষায় আছে
প্রান্তিক, শেষলেখা হয়ে
পুনরায়
সেই পূরবীতে ...
২।
“কিভাবে পাঠালে ডাক পার করে মানচিত্র,
মরুঝড়, সমুদ্র-তুফান?
কি করে জানালে তাকে তুমিই দোসর তার এ জন্মের
জলজ-যাত্রার? – প্রশ্ন করি
বন্দরে প্রতীক্ষারতা অপরূপা প্রেত-রমণীকেঃ
"কিভাবে সে চাঁদ উঠলে পরে
জানলো এ ফেলে যাওয়া মালাটি তোমার? বন্দরে
নামার আগেই
কি করে চেনালে তুমি তাকে তোমার গম্বুজে
লীন
সঙ্কেতের আলো-অন্ধকার?” – প্রেতিনী বলেনা
কিছু। স্ফীংসের মতো মৃদু হাসে।
সে হাসিতে দুলে ওঠে মানচিত্র, কাল, পটভূমি।
উনিশশো চব্বিশ সাল থেকে
দেখাযায় একটি জাহাজ কুয়াশা-কুহকে ভেসে
আসে...
#
“যে ডাক পাতাল থেকে আসে
যে ডাক অমাবস্যা রাতে টেনে আনে চাঁদকে
জোয়ারে
যে ডাক শিকড় হয়ে থাকে বৃক্ষটির প্রাণের
মাটিতে
তাকে চিনে পারে প্রকৃত নাবিকই শুধু – কোনোও
কম্পাস,ম্যাপ, সারেং'এর সহায়তা ছাড়া ...”
একজন শীর্ণ প্রেত একা, একমাত্র যাত্রী
এই কুয়াশাপোতের, ধীর পায়ে নেমে আসে, বলেঃ
“যেভাবে দান্তের ডাক একদা জাগিয়েছিল বিয়াত্রিচে
নামের মেয়েকে
সেভাবে কাউকে তুমি কোনোদিন দেখেছো কি ডেকে?”