প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Wednesday, May 12, 2021

হাসিরানী উপাখ্যান

 হাসিরানী উপাখ্যান


 

শুনলাম আপনি হাসিরানী দাস'কে খুঁজছেন । কেন খুঁজছেন কেজানে। তবে হদিশ পেতে হলে চলে আসুন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ...” ... নারীকন্ঠ । কিছু বলার আগেই কেটে গেলো ফোন ।

দুপুরে হোটেলে ফেরামাত্রই কাউন্টারে বসা নেপতি বলেছিল " এক ভদ্রমহিলা আপনাকে এই নিয়ে তিনবার ফোন করলো আজ ... ধরি আর বলে ১৭ নম্বরের বাবুকে দিন। যতো বলি বাবু নেই । কখন ফিরবেন জানিনা -- আমাকে বলুন আমি বাবুকে বলে দেবো' - কেটে দেয় ফোন ...” যদিও উত্তেজনায়  প্রায় ঘেমে উঠছিলাম তবু সমস্ত আড়াল করে একটা "থ্যাংকু " বল্লাম । ফিরে পা চালিয়ে দিলাম ১৭ নম্বর কোঠার দিকে।

 তিনদিন হলো এসেছি এখানে । তিন দিন ধরে সকাল নেই, বিকাল নেই, রাত নেই ঘুরে বেড়াচ্ছি 'হাসিরানী'র খোঁজে । ছোটো শহর। থাকার মধ্যে আছে তিনটে বাজার। তিন প্রান্তে। দুটি নদী। একটি প্রায় মিজে আসা খাল আর ইস্কুল কলেজ  আর অফিসকাছারি কিছু। শহরের অর্ধেক রাস্তাই দিন ভর প্রায় থাকে ঘুমিয়েই। তবু এই ঘুম-শহরেই আমার তিনিদিন কেটেগেলো – না’ত পুরো শহরের ক্সব দিকে যাওয়া হলো, না’ত মিল্লো কোনো খোঁজ। তবে খোঁজ করবার  কম্পাস বলতে ওই এক নাম ‘হাসিরানী দাস’  আর প্রায় কুড়ি পঁচিশ বছর আগেকার এক সাদাকালা ফোটো। সে’ও যে এই মহিলারই তারও কোনো সাকিন-মোকাম নেই। তবু এ’ই নিয়েই কোথায় যাইনি -- থানা, বাজার , দোকান , সিনেমাহল , পাব্লিক লাইব্রেরী ... জনে জনে ফোটো দেখিয়েছি । তিনদিনে শহরের প্রায় আধালোক আমাকে চিনে ফেলেছে কিন্তু চিনতে পারেনি ঐ নাম 'হাসিরানী দাস' আর ওই দুই থেকে আড়াই দশক পুরোনো ফোটো । আমার মুখের রেখায় , অভিব্যক্তিতে যে জন্মগত রুক্ষতা শুধুমাত্র তারই জন্যে খুব কেউ প্রশ্ন করেনি কেন খুঁজছি আমি এই 'হাসিরানী' কে। দুয়েকজন মুখ ফুটে বলে ফেল্লেও আমার চাউনি তাদের থামিয়ে দিয়েছে। বলেছি ঠিক ঠাক খোঁজ দিতে পারলে পুরস্কার দেবো আর ঠকানোর ধান্দা করলে পুলিশে ...

    আরো চারদিন থাকবো এ যাত্রা । খোঁজ করবো । সাত দিনের ছুটি নিয়ে এসেছি । এই সাতদিনে খোঁজ না পেলে আবার আসবো । আবার খুঁজবো । লোকাল কাগজে  বিজ্ঞাপন দিতেই পারি । কিন্তু তাতে ঠগের আমদানীই বেশী হবে বলে মনেহয়। ... আজ সমস্ত দিনটা শহরের পুব প্রান্তেই কাটিয়েছি । স্থির করেছিলাম রাত আটটা নাগাদ আবার যাবো । হোটেলে ফিরে নেপতির ‘কুক’ পালই’ এর হাতের ‘অমৃত’ মাছভাত খেয়ে ১৭ নম্বর ঘুপচিতে ঢুকে বিছানার মতো বস্তুটিতে গা এলিয়ে দেওয়ামাত্র ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভাঙ্গলো নেপতি’র ডাকে। কড়া নাড়ায়।  " স্যার  ... আপনার ফোন ... ওই ফোন … বলছিলাম না তখন …”

শুনলাম আপনি হাসিরানী দাস'কে খুঁজছেন । কেন খুঁজছেন কেজানে। তবে হদিশ পেতে হলে চলে আসুন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ...” ... নারীকন্ঠ । কিছু বলার আগেই কেটে গেলো ফোন ।

আরো দু তিনবার “হ্যালো, হ্যালো”  বলে নামিয়ে রাখলাম রিসিভার। দেঁতো হেসে নেপতি বল্লোঃ যা হোক্‌ , পেলেন স্যার ...” উত্তেজনায়  প্রায় ঘেমে উঠছিলাম তবু সমস্ত আড়াল করে একটা "থ্যাংকু " বল্লাম । ফিরে পা চালিয়ে দিলাম ১৭ নম্বর কোঠার দিকে। সময়, হাতে, তেমন নেই । সাড়ে সাতটায় বলেছে যেতে । এখন ঘড়ির কাঁটা ছটা পেরিয়ে চলেছে এগিয়ে  ...

          ইচ্ছে করেই নেপতিকে জিজ্ঞেস করলাম না ফোনে শোনা ঠিকানাটির ব্যাপারে । ওই পাড়াটা , ম্যাপ মতো, শহরের পশ্চিমে । আমার পরিকল্পনা ছিল আগামীকাল ওই দিকটাতে হানা দেওয়ার । 'মাকালী হোটেল' – অর্থাৎ যা আদতে একটি দোতলা বাড়িকেই কোঠায় কোঠায় ভাড়া দেওয়া , যার দুটি কোঠায় আবার দুটি ব্যাচেলার – মেস্‌ , তার বাইরে থেকেই রিক্সা নিলাম । " চলো বনমালী রোড । শংকরের পানের দোকান ...” সান্ধ্য অন্ধকারেও দেখতে টের পেলাম আমার বদন , সুরত , সাজ পোশাকের সঙ্গে 'বনমালী রোডের শংকরের পান দোকান " কে মেলাতো পারলোনা মাঝবয়সী রিক্সা চালক ।

সান্ধ্য মফস্বলের মেরুদন্ড-পথ ইস্টিশান রোড সাজছে। দোকানে দোকানে বাতি জ্বলতে আরম্ভ হয়েছে। মুখোমুখি সিনেমাহল্‌ “শ্রীরাধা” আর “শ্রীদুর্গা”র ‘ফাস্‌শো’ চলছে। ‘সেকেনশো’র গরম পোস্টার ঘিরে জমা হচ্ছে চোখগুলি, মুখগুলি। রিক্সা বাঁয়ে মোড় নিলো। এই বাজার – ‘সেন্টার মার্কেট’ – হালে ‘সন্তর বাজার’। ‘শ্রীকৃষ্ণ গেস্ট হাউস’ এখানের ‘বড়’ হোটেল। খবর নিয়েছিলাম আগেই। তাই ওখানে উঠিনি। আমার যাঁকে সন্ধান, যাঁর কুড়ি কিম্বা পঁচিশ বছর আগেকার যুবতী-ছবি আমার পকেটে, তাঁর সন্ধান না’ত দিতে পারে শ্রীকৃষ্ণ না’ত লোকাল আমলা-আমীরদের আর রাজ্যের মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভের ঠিকানা ওই ‘শ্রীকৃষ্ণ গেস্ট হাউস’। আমার অনুমান যে ভুল ছিলনা তার প্রমাণ আজই তো মিলেগেল হাতে হাতে ...

এই যে বাবু , শংকরের পান দোকান ...”

বিরাট এক গাছের তলায় , একট জনমানবহীন  ভিটের সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেলো রিক্সা । ফোনের মহিলা কন্ঠ বলেছিল ‘শঙ্করের পান দোকান, সব রিক্সাওলা চেনে’। এ’তো কোনো পান দোকান নয়ই আর আশেপাশেও দেখা যাচ্ছেনা দোকানমতো কিছু। বাতাসে তেলেভাজার ঘ্রাণ আসছে মাঝে মাঝে। মাঝে মাঝে বাতাস শুকনো।

বলতে বাধ্য হলাম “ পান দোকান ... মানে এখানে তো ”

হ্যাঁ বাবু , এটাই। এইটাই শঙ্করের পান দোকান। যে আপনাকে ঠিকানা দিয়েছে শঙ্করের পান দোকান, বনমালী রোডেরই বলেছে তো? আপনি ভুল শোনেননি তো? আপনাকে তো এদিকে আগে দেখিনি তাই …”

“না। ভুল শুনিনি… বনমালী রোডের শঙ্করের পান দোকানই বলেছে। বলেছে সবাই চেনে …”

“তাহলে এখানেই। আসলে এখানেই ছিল শংকরের পান দোকান । ওই বাড়ির মেজো ছেলে শংকর খুলেছিল । সে নাকি বেনারসী পান বেচতো বিদেশ থেকে আনিয়ে ...”

“কিন্তু এখন ...”

“আরে সেসব আমাদের হাফপ্যান্ট  বয়েসের কিছু পরের কথা । দোকান নেই । বাড়ির লোকজনও মড়ে হেজে গেছে । তবু লোকে ... “

 ভাড়া দিয়ে বিদায় করলাম রিক্সা চালককে । কোমরে হাত বুলিয়ে নিলাম আলতো । বে আইনি পিস্তল টা জোগাড় করেছি এই 'হাসিরানী' অভিযান বিষয়ে মনস্থির করবার পরেই । কুড়ি পঁচিশ বচ্ছর অনেক অনেকটা সময় । তার ভিতরে কে যে কি হয়েছে কেজানে আর তাছাড়া এই শহরে আমি আসিনি আগে কোনোদিন ।

  একটা মাঝারি প্রস্থের রাস্তা । দুপাশে সার সার বাড়ি । অন্ধকার । অথচ অন্য রাস্তায় আলো জ্বলছে দিব্যি। এখানেও এক সময় ঝপ করে জ্বলে উঠলো রাস্তাবাতি , চল্লিশ কিংবা ষাট পাওয়ারের । একটি দুটি রিক্সা চলে গেলো আমার সামনাদিয়ে । দুয়েকজন মানুষও । আমাকে ওই দাঁড়িয়ে থাকা , অন্ধকারে , সন্দেহজনক ভাবে , দেখলো সবাই কিন্তু পাত্তাই দিলোনা । যেনবা এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকাটাই দস্তুর ।

এই যে , আপনি না, হাসিরানীকে খুঁজছেন ?” আমার পিছনের অন্ধকার ছিঁড়ে উড়ে এলো বাক্যটি । কিঞ্চিৎ কৌতুক মেশানো। সঙ্গে নাকে এসে লাগলো ঝাঁঝালো গন্ধ – শস্তা পারফিউমের ।

হ্যাঁ । আপনি ... আপনি ... চেনেন ... মানে জানেন ... “

চলুন, বলছি ...”

চলতে লাগলাম । অন্ধকার ধরে । মেয়েটির পিছু পিছু । ঠিক কুয়াশা নয়। আরো কিসের একটা মশারি যেন ঘিরে রেখেছে আমাকে, আমার এই চলাকে, বাতাসকে, সামনের মেয়েটিকে। "শংকরের পান দোকান" এর পেছন বাগে মেঠো পথ। আরো দুটি বাড়ি পরলো চোখে। লন্ঠন কিংবা মোমের কিংবা কুপীর আলোর রেখা। এমনই আরেকটি ভিটের সামনে এসে থামলো মেয়ে। এই ভিটে - একে এমনিতে দেখলে ভাবতাম পরিত্যক্তই – যদিবা নাহয় হানাবাড়ি । তবে অন্ধকার চোখ সওয়া হলে বুঝলাম একদা মধ্যবিত্তের ভদ্রাসনই ছিল বটে।

বারান্দার দুপ্রান্তে দুটো কোঠা । বারান্দা আগলে একটা দরজা । বন্ধ কিম্বা ভেজানো । হাতের বাঁদিকের কোঠাটির দরজা খুলে মেয়েটি বল্লো "আসতে আজ্ঞা হোক্‌ " । বলার মধ্যে সেই তীক্ষ্ণ কৌতুক । কৌতুক না'কি বিদ্রূপ ? ব্যঙ্গ ? কোঠায় প্রবেশমাত্র দরজার ছিটিকিনি ভিতর থেকে তুলে দিলো মেয়েটি ।

আমি বল্লাম " ইয়ে, মানে , হাসিরানী কি এখানেই থাকেন ... না'কি থাকতেন ? আপনি ঠিক চিনেছেন কোনো হাসিরানীকে আমি খুঁজছি ... এই ফোটোটা ...” সঙ্গে সঙ্গে এক প্রবল , প্রায় অলীক , অলৌকিক হাসিতে ফেটে পড়লো মেয়েটি। ঘরের এক কোণে কমিয়ে রাখা হ্যারিকেনের আলোয় তাকেও মনে হতো অলীক, অলৌকিকই যদিনা হাসির ফাঁকে ফাঁকে সে বলে যেতো এই কথাগুলিঃ  আরে দূর, হাসি-ফাসি কাউকে আমি চিনিনা । তায় আবার 'রানী' । হাসিরানী । আমরা মশাই জন্ম থেকেই দাসী। তোমাদের দাসী । হাসি কোথায় পাবো বলো ... ছোটো শহর । কে আর আমাদের পোঁছে বলো ? যত কাস্টমার সব্বার সঙ্গে শো দেড়শো বার শোয়া হয়েগেছে । দেখলাম তুমি শহরে নতুন লোক । তাই টোপ ফেল্‌লাম । ওই 'মাকালী হোটেল' 'ও আমি যাই । ওখানে আমার ... মানে আমাদের লাইনের সবারই  আড়কাটি আছে । তাই তোমার খবর পাওয়া  ... আর এসেই যখন পড়েছো আমার প্রাসাদে তো, হাসিরানী'র কথা ভুলে এবার আমি-রানী'কে দেখো একটু চেখে ...”

যেমন হয় মফস্বলি বেশ্যারা -- তেমনি এ'ও। গায়ে গতরে মাংস কম। হাড্ডি বেশী। তায় শস্তা সাজগোজ । তবু এই মেয়েটার চেহারায় কখনো যে ধার ছিল তা'ই এখন চটক ।

কারেন্ট নেই। তবে শেষ হেমন্তের নিমিত্ত গরম, গুমোট কোনোটাই ঠিক বোধ হচ্ছেনা । মেয়েটি বিছানায় উঠলো জানালা খুলতে। " আজ শালারা দুপুরেই হুক্‌ খুলে নিয়ে গেছে ... দুপুর থেকেই কারেন্ট নেই " । বুঝলাম আইনি বিজলী নেই এখানে। ওই লাইট পোস্টে কাঠি দিয়ে 'কারেন্ট চুরি'। জানলা খুলে দিতে একরাশ হাওয়া ঢুকলো কোঠায় কিন্তু সঙ্গে ঢুকলো একটা গন্ধও। বিছানা থেকে নেমে গিয়ে মেয়েটি হ্যারিকেন উস্‌কে দিয়ে সেটাকে ঝুলিয়ে দিল দেওয়ালের গালে লাগানো একটা আংটায়। নিজের মনেই বল্লো যেনবা " ও শ্মশানের মড়াপোড়া গন্ধ । ও মিলিয়ে যাবে । এখন কোনো চিতা জ্বলছেনা । তাহলে আলো দেখতে পেতে । হরিবোল্‌ শুনতে পেতে ... না না জান্‌লায় কেউ উঁকি মারবেনা । ভূতও না। গলীর সব ঘরেই 'রানী'রা আছেন । কেউ রাজা বাদশা ধরতে গেছেন আর আমার মতন যারা পাটরানী তাদের কোঠায় বাদশাজাদা  নিজেরাই ...” এবার মেয়েটি বিছানার উপরে এসে বসলো আমার কিনার ঘেঁষে। একটা বুক আমার পিঠে ঠেসে দিয়ে বল্লোঃ "আমাকে খাওয়ার আগে কি খাবে বল? রাম না বিয়ার ? তোমাকে ফোনে পাওয়ার পরেই আনিয়ে রেখেছি । মীরাদির ঘরে ফ্রিজ আছে । কারেন্ট ছিলনা । বরফে রাখতে হয়। শালি বরফের দামও ধরলো ...”

এইমতো অভিজ্ঞতা আমার প্রথম নয়। বাস্তবে মন্দও লাগছিল না মেয়েটির শরীর । কথাবার্তা । আমাকে ধরার জন্য যে ফাঁদটি ও পেতেছে সে'ও পেতেছে যথেষ্ট বুদ্ধি করেই । আর এই প্রায় আকাশপাতাল সন্ধান, 'হাসিরানী দাস" এর, যা হয়ত এক অসম্ভব প্রয়াসই, তবুও যা আমার সিসিফাসের  পাথর, তার মানসিক ক্লান্তিও যেন চাইল একটু আশ্রয়। একটু পালানো । বল্লাম " বীয়ার । কিন্তু কত নিলো তোমার মীরাদি ? “  আমি জানি এরা কিভাবে এগোয় । ধীরে ধীরে তাই কোনো ভণিতা ছাড়াই পকেট থেকে মানিব্যাগ বারকরে  "ওকে দামটা দিয়ে দিও " “আরে  এসেছো হাসির রানীর খোঁজে । জানি তুমি রাজাগজা নাহয়ে যাওনা । টাকা ত নেবই । কিচ্ছু ফ্রিতে হবেনা। তবে এখন রাখো । বীয়ার খাও । আমাকে খাও । তারপরে  সব মিলিয়ে লিস্টি ধর । হ্যাঁ , মিথ্যে কথায় ভুলিয়ে আনার জন্য ডিসকাউন্টও  দেবো " প্যান্টের উপর দিয়েই আমার পুরুষাঙ্গে একটি মোচড় দিয়ে , চোখটিপে বল্লো মেয়েটি । তারপর কোঠার অন্ধকার কোনে চলেগেলো সম্ভবতঃ বীয়ার আনতেই।

বীয়ারপানের সঙ্গে সঙ্গে নিজের আর আমার শরীর থেকে একটি একটি করে কাপড় খুলে ফেলেদিলো মেয়েটি। যখন দুজনেরই আর শেষখন্ড অন্তর্বাসভিন্ন  পরণে নেই আর কিছু তখন আমার কোলে , আমার উরুতে বসে গলা জড়িয়ে বল্লোঃ "আচ্ছা , কে এই হাসিরানী  যাকে খুঁজছো তুমি ?” ... অবচেতনের  কোথাও কি ঠিক এই প্রশ্নটিই আশা করছিলাম আমি ? যদি না করি তাহলে প্রশ্নটি করামাত্র কেন খুলে দিলাম আপনাকে, অনর্গল ? ...

হাসিরানী ... হাসিরানীকে  তার বয়সকালে চুদে পেট করে দিয়েছিল আমার বাবা "

রেপ করেছিল " ?

জানিনা । তবে মনে হয়না । আমার বাপ এমনিতে ছিল বেশ ভদ্রলোক "

তা হাসিরানীকে  পেলো কোথায় তোমার বাবা " ?

খুব সম্ভবতঃ সে কাজ করতো আমাদের বাড়িতে "

তা তুমি এখন হাসিরানীকে খুঁজছো যে? এখন কি আর তার চোদার বয়েস আছে বলে মনেহয় তোমার "

আরে নাহ্‌ । আমি বাপের পাপের ... “

পা-চ্চি-ত্ত " চিবিয়ে চিবিয়ে , তার সেই ধারালো কৌতুক কিংবা বিদ্রূপ মিশিয়ে " করতে চাও " ?

প্রায়শ্চিত্ত কি'না জানিনা । তবে তার যে ক্ষতি করেছে আমার বাবা তার কিছুটা যদি পারি ফিরিয়ে দিতে ... “

তা তোমার বাবাটি এখন কোথায় ? আর তুমি হাসিরানীর  খোঁজই যে এখানেই পাবে ... "

 বল্লাম বাবার মারা যাওয়ার কথা । বল্লাম বাবার বেশী বয়সের বৌ আমার মা'র কথার ইঙ্গিতে বাবার জীবনে অন্য মেয়ে থাকার সম্ভাবনার  কথা । বল্লাম বাবা মারাগেলে কাগজপত্র ঘাঁটতে ঘাঁটতে পাওয়া ফোটো আর ফোটোর পেছনে লেখা নাম আর  প্রায় মুছে আসা ঠিকানার পোঃ রহিমগঞ্জ ......

কথার ফাঁকে ফাঁকে সে খুলে ফেলে দিল আমার শরীরের শেষ বস্ত্রখন্ডও । কিন্তু তার কোমরে গোলাপী পেন্টি তখনো বিদ্যমান। তার হাত এবার আমার পুরুষাঙ্গে । হঠাৎই  আমার পুরুষাংগটাকে মুঠো করে ধরে বলে উঠলো " সত্যি দেখবে হাসিরানীকে ? দেখতে চাও " ? আমার সদ্য জেগে ওঠা উত্তুঙ্গতা মুহুর্তে শীত । আলো , ঝুলন্ত লন্ঠনের , আমার চোখে, তার চুলের পিছনে । ফলে মুখ তার , চোখ তার অন্ধকার । আমাকে টেনে তুল্লো সে । দরজা খুলে , বারান্দা পারকরে নিয়ে ঢুকলো বারান্দার আর প্রান্তের কোঠাটিতে । সেখানে অন্ধকার আরো জমাট । সেখানে হ্যারিকেন নেই । কুপীর আলো । বাতাসে নড়ে উঠলো । সেখানে মেঝেতে একটি  তোশকের মতো কিছুতে জমাট বাঁধা অন্ধকার । হঠাৎই নড়ে উঠলো । কিছু বল্লো কি ? মনুষ্যকন্ঠ শুনলাম কি ? ...

ওই দেখো তোমার হাসিরানী দাস । তোমার বাবার হাসিরানী । ওই যে ফোটোটা পকেটে নিয়ে ঘুরছো ওটা তোমার বাবা', ওই আহ্লাদের দিনে , ফোটোতোলার দোকানে পাঠিয়ে তুলিয়েছিল । দেখছ " ? আমাকে টানতে টানটে সে নিয়ে গেলো ওই জমাট অন্ধকারের কাছাকাছি । নাকে লাগলো দুর্গন্ধ । " একে কি ফিরিয়ে দেবে তুমি ? কে পারে ওকে কি ফিরিয়ে দিতে ? হ্যাঁ , আমিই তোমার বাপের ওই করে দেওয়া পেট থেকে জন্মেছি । আমাকে কিছু দেবে তুমি ? কি দেবে ? সময়ের উল্টোরাস্তা ধরে হেঁটে কোনো কিচ্ছুরই শোধ দেওয়া যায়না । পালটানো যায়না । ... আমার এইড্‌স্‌ । তাই আমি তোমাকে করতে দিইনি । অন্যদের দিই । ওরা জানেওনা যে ওদের অজান্তে , ওদের আহ্‌ আহ্‌ উহ্‌ উহ্‌ র  আড়ালে ঠিক কি দিচ্ছি আমি ওদের ... । যখন জানবে তখন সয়ের গলী উজিয়ে ওরা যদি আমায় খুনও করে ফেলে -- কি পাল্টাবে ওদের ? কি দিতে পারবে তুমি আমাকে, আমার মা'কে " ? ... এতোদূর প্রায় একশ্বাসে বলেযায় মেয়েটি । এই স্বর অন্য । এই স্বর আমি শুনিনি তার কন্ঠে এতাবৎ । এই স্বরে ব্যঙ্গ নেই, বিদ্রূপ নেই, কি আছে কে জানে ... “ না, আমার মা তোমাকে চিনবে না । তোমার সোনারচাঁদ বাপ এলেও চিনবেনা । মা'র অনেকদিনের অসুখ সব ভুলে যাওয়ার । পারবে সময়ের উল্টোপথে হেঁটে ঠিক ওইখানে যেতে যেখানে তোমার সোনারচাঁদ বাপ তার বারা নিয়ে ঢোকাতে চলেছে হাসিরানী'র গুদে ? পারবে সেখানে গিয়ে কেটে দিতে ওই বারাটা ? কিংবা আমার মায়ের গুদে মাল খসানোর আগে ? ... পারবেনা ? তাহলে ? তাহলে সময়ের কোন ভুল, কোন পাপ – শোধরাতে এসেছ তুমি এখানে " ? ... যা ঘটছে সে'কি বাস্তব না'কি হাসিরানী দাস নিয়ে আমার অবসেশনের ফল ? বিকার ? স্বপ্ন ? নাকি বীয়ারে কিছু মিশিয়ে দিয়েছে মেয়েটি ? আমি কি মরেযাবো ? এই সবই মৃত্যুর ঘোরে দেখে যাওয়া ? ... ... ঠিক তখুনি আবার প্রবল , প্রায় অলীক , অলৌকিক সেই হাসিতে ফেটে পড়লো মেয়েটি। নিজের কোমর থেকে শেষ কাপড়খন্ড ছুঁড়ে দিলো আমার মুখে । " ভয় পেয়ে গেলে ? হাঃ ? রাজপুত্তুর , এতো সহজেই ? তুমি না হাসিরানীকে  তার প্রাপ্য দিতে চাও , শোধ দিতে চাও ... তা এসো , এই দেখো ... এইড্‌স্‌ ফেইড্‌স্‌ কিচ্ছু নেই গো ... এখানে শোধ দাও ইচ্ছে মতন শোধ দাও আর যাওয়ার আগে দিয়ে যাও হব মালকড়ি ... “ কানে ভেসে আসে এক অদ্ভুত হুল্লোড় । "ও কিচ্ছু নয় গো । ও হচ্ছে হরিধ্বনি । হরিনাম । শুনলে পুণ্যি হয় । কতো লোক ওই শুনে শুনে যে চুদেছে আমাকে । কই তুমিও এসো " ... মেয়েটির হাত এগিয়ে আসে ... আমার হাত না'কি তখন-মৃত লিঙ্গের দিকে ... কেজানে । আমি তার কাছে ধরা দিইনা। আমি ওই নগ্ন অবস্থাতেই  দৌড়ে বার হয়ে আসি । বারান্দা , চৌহদ্দি পেরিয়ে ছুটতে থাকি বড় রাস্তা ধরে । পেছন পেছন ছুটে আসে প্রবল , প্রায় অলীক , অলৌকিক সেই হাসি । ছুটে আসে হরনামের হুল্লোড় । ছুটতে ছুটতে ছুটতে ছুটতে এক সময় টের পেলাম আমি একা নই , আমার আশে পাশে , সামনে , পিছনে এমনই ভীতিগ্রস্থ, ভূতগ্রস্থ ছুটে চলেছে আরো আরো আরো  অনেক অনেক অনেক অনেকজন নগ্ন  ... তবে টের পেলাম না ‘হাসিরানী’র হদিশ পাওয়া গেলো না’কি গেলোনা ...

 

 

 


ঘুম ঘর