আমি সব দেবতারে ছেড়ে ।। ২ ।।
অদ্যাবধি আমাদের রুগ্ন মফস্বলে
যে বৃদ্ধ ঘরে ঘরে ‘ফ্রন্টিয়ার’ বিক্রি করেন
আমি তাঁর রাজনীতি নয়, আমি তাঁর প্রতিজ্ঞা কে দেখি।
বয়স বেড়েছে ঢের নর নারী দের ।
ঈষত নিভেছে সূর্য্য নক্ষত্রের আলো । তবু এই বিনয় গোস্বামী
‘মানুষকে নবতর দিগন্ত’ দেখানোর
ব্রতে শুধু এই কাজ টুকু নিয়ে রোদে-জলে-বাদলে-খরায়
যেভাবে বেড়ান ঘুরে পার হয়ে অশীতির বেড়া, তিনি যদি
বিপ্লবের সাধক না হোন্
তবে আমি আর কোনো সাধক চিনিনা, কোনো
বিপ্লবীও না। ...
অথবা সে কবিরাজ বাবু, মহিষাসন বাজারের কাছে
দু টাকার ডিস্পেন্সারী চালিয়ে চালিয়ে
শেষ দৃশ্যে মারা যান একা ঘরে শুয়ে । অথচ কলকাতায় এক
কেমিকেল ফার্ম অনেক বেতন দিয়ে কিনে নিতে চেয়েছিল তাঁকে।
শুধু এই "চাষা আর রিক্সাওলাদের" বাঁচাবেন বলে তিনি
সেই সব প্রত্যাখান করে এখানে ছিলেন পড়ে বিরাশি বৎসর।
ইনি যদি সন্ত না হোন্ তবে আমি আর কোনো সাধক চিনিনা।
জানিনা এঁদের মর্মে সে রকম আধ্যাত্মিক কোনো
ঢেউ উঠতো কি’না , একথা নিশ্চিত জানি
এঁদের সতত ছুঁয়ে যে থেকেছে, যে'ই থাকে
তারা হয় আদত ঈশ্বর।
নীলোৎপল দাশ নামে এক চিত্রকর
একা একা ঘরে বসে ছবি এঁকে এঁকে
এক দিন বর্ষা রাতে সাপের কামড়ে মরে গেলো।
যে দেবতা তাকে ঐ একা একা সাহস জোগাতো
সেই একা দেবতার খোঁজে সকল মন্ডপ ছেড়ে আমি
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি। বলি আমি এই হৃদয়েরে
দেবতা যেমনি হোক্, যে তাকে বহন করে
ঝড়ো রাতে যেতে পারে দোল্যমান সাঁকো পার হয়ে
সে'ই নিজে আদত দেবতা। ভৃগু হেন এরা যদি
কোনো দেবতাকে পদাঘাতও করে তবে
দেবতাও মেনে নেবে, যদি হয় দেবতা প্রকৃত।