সাগর থেকে ফিরে ...
আবার সমুদ্রের সঙ্গে দেখা। প্রায় আড়াই বছরের ব্যবধানে। এই সাক্ষাতে সমুদ্রের অতল থেকে যেন শুনতে পেলাম দুটি গান ... শুনতে পাচ্ছি দুটি গান ... দেখতে পাচ্ছি দুটি গানঃ
১।
অনন্তসাগরমাঝে দাও তরী ভাসাইয়া।
গেছে সুখ, গেছে দুখ, গেছে আশা ফুরাইয়া।।
সম্মুখে অনন্ত রাত্রি, আমরা দুজনে যাত্রী,
সম্মুখে শয়ান সিন্ধু দিগ্বিদিক হারাইয়া।।
জলধি রয়েছে স্থির, ধূ-ধূ করে সিন্ধুতীর,
প্রশান্ত সুনীল নীর নীল শূন্যে মিশাইয়া।
নাহি সাড়া, নাহি শব্দ, মন্ত্রে যেন সব স্তব্ধ,
রজনী আসিছে ধীরে দুই বাহু প্রসারিয়া।।
গেছে সুখ, গেছে দুখ, গেছে আশা ফুরাইয়া।।
সম্মুখে অনন্ত রাত্রি, আমরা দুজনে যাত্রী,
সম্মুখে শয়ান সিন্ধু দিগ্বিদিক হারাইয়া।।
জলধি রয়েছে স্থির, ধূ-ধূ করে সিন্ধুতীর,
প্রশান্ত সুনীল নীর নীল শূন্যে মিশাইয়া।
নাহি সাড়া, নাহি শব্দ, মন্ত্রে যেন সব স্তব্ধ,
রজনী আসিছে ধীরে দুই বাহু প্রসারিয়া।।
২।
সমুখে শান্তিপারাবার–
ভাসাও তরণী হে কর্ণধার ।
তুমি হবে চিরসাথি, লও লও হে ক্রোড় পাতি–
অসীমের পথে জ্বলিবে জ্যোতি ধ্রুবতারকার ।।
মুক্তিদাতা, তোমার ক্ষমা তোমার দয়া
হবে চিরপাথেয় চিরযাত্রার ।
হয় যেন মর্তের বন্ধনক্ষয়, বিরাট বিশ্ব বাহু মেলি লয়–
পায় অন্তরে নির্ভয় পরিচয় মহা-অজানার।।
ভাসাও তরণী হে কর্ণধার ।
তুমি হবে চিরসাথি, লও লও হে ক্রোড় পাতি–
অসীমের পথে জ্বলিবে জ্যোতি ধ্রুবতারকার ।।
মুক্তিদাতা, তোমার ক্ষমা তোমার দয়া
হবে চিরপাথেয় চিরযাত্রার ।
হয় যেন মর্তের বন্ধনক্ষয়, বিরাট বিশ্ব বাহু মেলি লয়–
পায় অন্তরে নির্ভয় পরিচয় মহা-অজানার।।
পুনশ্চ । শান্তিনিকেতন,৩ ডিসেম্বর ১৯৩৯ বেলা একটা, শেষ লেখা’ গ্রন্থভুক্ত