প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Sunday, October 14, 2012

বন্ধুর বাবার জন্য





বন্ধুর বাবার জন্য


আমার বন্ধুর বাবা একজন চা'দোকানি ।
 ‘মাঝে একবার মুদিখানা খুলেছিলেন সেখানে আলোচোনা চলত ফিদেলকাস্ত্র কি ভাবে শেষ পর্যন্ত তার ব্যক্তি অপমানের জ্বালায় জ্বলতে জ্বলতে , স্বৈরসাশন উপেক্ষা করে একাই এক পার্কের বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে পড়ে তার ক্ষোভ বমন করতে থাকে,আলোচনা হ'ত অপারেশন বর্গার স্থানীয় সাফল্য নিয়ে...’
অতএব সে দোকান স্বাভাবিক ভাবেই চলেনি।
আমাদের ইস্কুল থেকে ফেরার পথে যে মাঠ তার ঠিক মধ্যিখানে ছিলেন একজন বিরাট, নাম না জানা, ফুল ফল না হওয়া গাছ। তাঁর তলায় বসে দুদন্ড জিরিয়ে নিতো পথ চলতি সেই মানুষেরা যারা নিতান্ত সাধারন। আমরাও ইস্কুল পালিয়ে, ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হলে এসে বসে পড়তাম সেই গাছের ছায়াতে। দেখতাম ছায়ার আবর্তে বসে জাবর কাটছে অলস ছাগল, গরু, ভেড়া, মোষ। শুনতাম সেই নিতান্ত সাধারন মানুষেরা বলছে তাদের নিত্য দিনের হেরে যাওয়ার কাহন । তুমুল বর্ষার কালেও সেই গাছ ছিলেন আমাদের একমাত্র ছাতা। তাঁর কোটরে বাসা বাঁধা সাপ আর সাপের বাচ্চারাও কিছু বলতোনা আমাদের ...
বন্ধুর চা’অলা বাবার সঙ্গে এই গাছটির যে মিল আমি খুঁজে পাই তাতে কোনো পরাবাস্তব নেই, সিম্বলিজম নেই। তাই সেই মাঠে সেই গাছটি এখনো আছেন কি’না না জানলেও আমি সুযোগ পেলেই অদ্যাবধি এসে দাঁড়িয়ে থাকি সেই গাছের তলায়। দেখি ঐ গাছ ছায়া দিয়ে আগ্‌লে রাখছেন সেই মানুষদের যারা নিতান্ত সাধারন, দেখি তাঁর পাতা ঝরছে, পাতার থেকে ঝরছে শিশির ... আর ঐ ভাবেই আমার বন্ধুর বাবা ক্রমে ক্রমে হয়ে যান আমারও বাবা ... ছায়াদায়ী ... একলা এক বিপুল মহীরূহ...

ঘুম ঘর