প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Wednesday, January 9, 2013

অথ বেঙ্গালোর কথা



অথ বেঙ্গালোর কথা
১।
যে শহরের সমস্ত পাখিই আসলে আরশোলা
সেই শহরের নামই বেঙ্গালোর,
অর্থাৎ বেঙ্গালোর কোনো একটি বিশেষ শহরের নাম নয় –
যেখানেই বাপ-ঠাকুর্দার ভিটেবাড়ি, ঠাকুমার চন্দন টিপ
অথবা সরু নালার উপর ঝুঁকেপরা এক বাঁশের সাঁকো
বিক্রি করে লোকে ‘প্রো’ হতে এসে হয়ে ওঠে ‘প্রেত’
সেই সমস্ত উজ্জ্বল অন্ধকারময় শহরের নামই
বেঙ্গালোর।
অন্য অনেক জায়গার মতোই
কলকাতা বলে একদা যে সভ্যতাটি ছিল,
যা আজ নন্দন, কফিহাউস আর চারশো বিশেদের আস্তানামাত্র
সেখানকারও ‘লাকি’ আরশোলা গুলি বেঙ্গালোরে উড়ে এসে
পাখি সেজে যায়। তবে আরশোলা যেহেতু পাখি নয়
তাই তারা উড়তে পারেনা, ছুঁতে পারেনা শূন্যের ভিতরের ঢেউ,
আকাশের ভিতরের মেঘ ও রোদ। ফলতঃ
বেঙ্গালোরের সমস্ত আরশোলারা মিলে একদিন ঘোষনা করে যে
পৃথিবীতে পাখি বলে আসলেই কিছু নেই, যা আছে
তা আসলে আরশোলাই।
ইন্টারনেটে এই ঘোষনা দেখে প্রাকৃত আরশোলাগুলি হেসে হেসে কুটিপাটি হয়।

২।
সুখি মানুষদের এই শহর আমাকেও সুখি হতে বাধ্য করতে চেয়ে
এনেদেয় সুখিসুখি সহকর্মী,প্রতিবেশী এবং চ্যানেল।
উদ্দাম উইকএন্ডে রিসোর্ট-আমোদ,মল্‌, টুইটার, ফেইস্‌বুক্‌ আর মার্কিনি নির্বাচন দিয়ে
আমাকে সাজাতে চায় অন্য সব সুখীদের মতো।
নানাবিধ বিজ্ঞাপন দিয়ে আমাকে শাসিয়ে যায়। বলেঃ
‘তোমাকেও এবম্বিধ সুখি হতে হবে’।
ফলতঃ আমিও ভয়ে সুখীদের মতো সেজে অফিসের এসি রুমে দিনভর কাজকরি ল্যাপ্‌টপ্‌ নিয়ে।
অথচ রাত্রি এসে কিকরে যে ছিঁড়ে ফেলে আমার এ সুখী সুখী সাজ!
তখন গোপনে আমি দুঃখী লোকের সাথে দেখা করবো বলে
নেশাগ্রস্থ পায়ে হাঁটি শহরের প্রান্তবর্তী অসুখী গলীতে –
যেখানে বস্তীর শেষে হিজড়াদের ছেড়ে যাওয়া একটি কোঠাতে
অনেক পুরোনো এক ভাঙ্গাচোরা আয়না রাখা আছে...

ঘুম ঘর