প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Saturday, February 16, 2013

রিল্‌কের প্রেরণাজনিত ।।১।।





রিল্‌কের প্রেরণাজনিত

১।
চেতনার অরুন্তুদ এইসব আর্ত্তনাদ শুনে
কেউ কি  দাঁড়াবে থম্‌কে  কখনো এখানে?
সাড় সাড় নীল এই আকাশের ভিড়ে
সাড়া দেবে অতিকায় কোন্‌ দেবদূত?
যদিওবা সাড়াদেয়,সান্তনার ছলে যদি জড়ায় বাহুতে –
তুমি ভেঙ্গে গুঁড়োহয়ে সমূলে হারাবে ঐ মহাবলী অস্তিত্বের ভিড়ে ...
কেননা সকল রূপই সন্ত্রাসের প্রথম সোপান,
প্রতিজন দেবদূত ও দেবশিশু তাই
সন্ত্রাসের ভীষণ সংকেত...
যেনবা সাইরেন তারা জ্বালামুখী উদ্গীরণ কালে ...
তুমি তাই ঢেকেরাখো চেতনার সর্ব্ববিধ দাহ্য হাহাকার –
কেননা পশুরো কাছে এই সত্য সুবিদিত আজ
মানুষ বাস্তুহারা তাদেরি সপ্রসংগ ব্যাখ্যা সংবলিত
এই পৃথিবীতে ...
তবুও ঘুমের ঘোরে মনেহয় যেন
হয়তোবা বৃক্ষএক উদ্‌বাহু প্রতীক্ষাতে আজো
আমাদেরি তরে জাগে দূরে কোনো পাহাড়ের কোলে ...
অতীতের খাঁখাঁ রাস্তা নিরালোক জেগে আছে
হয়তোবা আমাদেরি তরে ...
আর আছে সহোদরা দীর্ধ নীল রাত্রিগুলি –
যাদের অঙ্গুলী নিয়ত নিরত থাকে
বিস্তৃতির সীমা নির্ধারনে,
প্রত্যেকের তরে তারা ওঁৎ পেতে থাকে যেন
পথহীন সমুদয় পথেদের বাঁকে ...
মনেহয় ইহাদেরি দৃষ্টি এড়াতে
প্রেমিক-প্রেমিকা বলে ইতিহাসে সুবিদিত যারা
তাহাদের বাহুঘের থেকে অশরীরী ধোঁয়ার কুন্ডলী
প্রসারিত হতেথাকে নিঃশ্বাসের মতো অজানিতে ...
আকাশের কথা বলে তবু আকাশ চেনেনা,
শুধুমাত্র বিহগীর আলোকিত ডানার উচ্ছাস
ধূধূ সে নীলের মর্ম বোঝে অন্তরালে ...
তুমি তাই পুড়েযাও একা
পুড়ে যাও দেবদূতের অহর্নিশি পদপাত চেয়ে ...

#
তবুতো তোমাকে চায় ফাল্‌গুন এখনো নিভৃতে,
একটি নক্ষত্র কভু পথচেয়ে ছিল শুধু তোমার  দৃষ্টির,
একটি হাওয়ার ঢেউ তোমাপানে জেগেছিল কবে –
দূরে কোনো অতীতের বুকে
সেতার এক বেজেছিল
কবে কার খোলা বাতায়নে ...
– এ সকলি তোমাহেতু তবু
তুমি সব ডিঙ্গিয়ে গিয়েছ,
প্রতিখানি অঙ্গীকারে তুমি এতাবৎ ব্যর্থ হয়েছো...
কেননা মুহুর্তগুলি পক্ককেশ গোয়েন্দার মতো
ব্যবচ্ছেদ করে করে তুমি
চেয়েছো প্রচ্ছদ শুধু – মুহুর্মুহু নূতন,উজ্জ্বল –
যেনবা রয়েছে ঢাকা পরতে পরতে
মুখহীন দেবী কিংবা দৈব কোনো প্রেয়সীর চোখ ...
( যদিবা কোথাও সে থেকেথাকে তবু
  কোথায় বসাবে তাকে
তোমার চৈতন্যের এ ফুটিফাটা ঘরে –
 – যেখানে সমস্ত রাত বিকট ভাবনাগুলি
শব্দসহ সারারাত আনাগোনা করে ...?)
কিন্তু চেতনা তব প্রতিবারই বেদনার কালে
আশরীর প্রেমেনগ্ন নায়িকার কাহিনী গেয়েছে,
অথচ এ সত্য আজ দিবালোক হেন প্রমানিত
মৃত্যুর প্রেম হেন প্রেমেরো মৃত্যু আছে শ্মশানে, কবরে ...
এবং সেসব নারী – যারাসব পরিত্যক্তা প্রেমিকের দ্বারা –
সতীলক্ষী বধূ কিংবা রক্ষিতার চেয়ে –
ঢেরবেশী মর্মান্বেষী প্রীতি দিতে পারে
বেপথু গমন এই নায়কের পরাজয় নয় ...
বরং এসব গাথা নায়কের পাতার মুকুটে
উপহার দিতে থাকে নতুন পালক ...
তবুও সময়, সেই পরাক্রান্ত যখ –
নির্বাপিত করেদেয় সকল প্রদীপ ...
সকল নায়কগুলি, বীরগুলি, এবং প্রেমিকও
ডুবেযায় প্রকৃতির অন্ধকার জটিল জঠরে ...
মাঝে মাঝে মনেহয় প্রকৃতিও বন্ধ্যা হলো না’কি?
বিলুপ্ত হলো কী শক্তি পুনর্জননের?
হয়তোবা এ কাহিনী সত্য নয় ততো
যতো সত্য আছে সেই নারীর গহনে
যে নারী ঝড়ের রাতে
স্বামী ও প্রেমিক দ্বারা পূর্বাপর পরিত্যক্তা হয়ে
গিয়েছে অপর পথে
পৃথিবীকে অন্য এক আলো এনেদিতে ...
গমনের লগ্ন তার মনেহয় শতাব্দীর সেই সুসময়
যখন তীরের মতো ধনুকের সবকিছু উদ্দামতা নিয়ে
ছিন্ন করে মদালসা, প্রেমিকের স্তুতি, রতি, সকল শৃংগার
দৈব বাণ ধায় তার একমাত্র লক্ষ্যটির পানে ...
আমাদেরো পদতলে গহন প্রস্তাবে
এরকম ঝাঁপ দেওয়া ছাড়া
অন্যকোনো সমতল নেই,
নেই কোনো সংগোপন গহন ব-দ্বীপ –

#
ধ্বনি শুধু, স্বর শুধু আর সুর ইথারে বিস্তৃত ...
হে হৃদয়, একা বসে শব্দহীন শোনো,
শোনো সে সন্তের মতো যতোক্ষন ব্যাপ্ততর অপর আহ্বান
না এসে আকাশ থেকে উড্ডীন করে তাকে মহানীলাকাশে...
তবু সে খোলেনা চোখ, প্রণামের সহজ ভঙ্গীতে
ডুবে থেকে ক্রমে ক্রমে মহানীলে ভেসে যেতে থাকে ...
তুমি সেই দ্বিজত্বের ভার প্রকৃতই বহমে অক্ষম,
তবু সেই স্বর শোনো তুমি, সেই সুর –
বাতাসে যে সুর বাজে – এবং নিভৃতে
কেবলি তোমার দিকে ধেয়ে আসে চুপে –
আজো সে এসেছে দেখো অকালে যাহারা মৃত
তাহাদের অন্তর্গত শব্দহীন স্বরলিপি বয়ে ...
অসহায় তাদের নিয়তি জেগেছে তোমাকে ঘিরে
উপাসনা ক্ষণ জুড়ে প্রতিটি মন্দিরে ...
তোমার নিকটে তারা অন্য কোনো কৃপা নয়
যাপণের যৌক্তিকতা চেয়েছে কেবলি...
তুমি কি জেনেছো ঠিক আজ তারা সন্ন্যাসী না পথের ভিখারী?
তাহাদের কাছে তুমি বেনোজলে ভেসে আসা ছেঁড়া চটি হেন
অদরকারী কোনোকিছু তবু
তোমার জীবন আজো ফিরে যেতে চায় কেন তাহাদেরি দিকে?

কি এর উত্তর দেবে মহাকাশে ভ্রাম্যমান অতিকায় কোনও দেবদূত?
আর উত্তর দেয়ও যদি কোনো
সান্তনার ছলে যদি জড়ায় বাহুতে –
তুমি ভেঙ্গে গুঁড়োহয়ে সমূলে হারিয়ে যাবে
তার ঐ মহাবলী অস্তিত্বের ভিড়ে ...
n  আদি লেখন ১৫/০৯/২০০৫, বেঙ্গালোর
n  ফিরেলেখা ১৬/০২/২০১৩ , বেঙ্গালোর

ঘুম ঘর