বয়ঃসন্ধি বই
১।
এসব অক্ষর আমি যদিও লিখেছি কবে গতজন্মে, তবু
বন্দী আমি এতাবৎ সেই
দূর সাগরের তীরে
যেখানে বসন্ত রাতে
কবিতারা ছায়ার শরীরে
আমাকে নিয়েছে ডেকে
– দেখিয়েছে তারার প্রপাত –
আমাকে রয়েছে ঘিরে
অদ্যাবধি সে বাতাস
সে আকাশ, সেইসব
তারা আর রাত ...
সদ্য কিশোর হওয়া
সেইসব অক্ষরের চোখে
চোখ রেখে জেগেছিল
যতো নারী, মহিলা, যুবতী –
তাদের ভাসিয়ে নিয়ে
চলেগেছে নদী ...
যেসব বাহুর
স্পর্শে উচ্চকিত এসব অক্ষর -
যে মদির ওষ্ঠ গুলি
মধ্যপথে আগুনের স্বর -
শুনেছিল – গোধূম
বর্ণের যতো নারীর শরীর
যতি চিহ্ন দের মতো
করেছিল ভিড় –
তারা সব তাদের সময়
সত্য বাস্তবতা নিয়ে
সময়ের চোরাস্রোতে
গিয়েছে হারিয়ে ...
তবুও কুয়াশা সেই, ঝঞ্ঝা
বিধ্বস্ত সেই সাগর, বন্দর –
অদ্যাবধি ছুঁয়ে
আছে কবিতার নাভিকুন্ড, আমার শিকড় ...
২।
সে এক নিদাঘ
সন্ধ্যা। আনমনে একা
এসেছি বনের মতো পপির
বাগানে।
পপি ফুল – এতো আর –
দেখিনাই আগে –
আকাশী, উদাসী নীল,
কালো, শাদা, তামাটে, বেগুনী
ফুলের সাম্রাজ্য
ঘিরে সাগর,উন্মত্ত, ফুঁসে বৃষের মতন -
বন্দর,
ভারাক্রান্ত, বিষনীল পপির বাতাসে ...
যাদের বাগান,
তারা, জলেডোবা জাহাজের থেকে
তুলে এনে
মনিমুক্তা, হারানো তৈজস
একদা বিক্রি করতো
দূরের বাজারে ...
তাদের লুকানো ঐ
বাগানে দাঁড়িয়ে
জীবন ও মৃত্যুর
মতো
সংশয়ী, শক্তিশালী
প্রশ্নমালা নিয়ে
কবিতায় ও ঢেউয়ে
আমি
সে প্রথম গিয়েছি
হারিয়ে ...
৩।
এসব অক্ষরগুলি জল,
ঢেউ, বাতাস আর প্রেমের সন্ততি-
কবিতার দেহ পেয়ে
তার সব চলে গেছে নিজ পথে হেঁটে
যেতে যেতে গেয়ে
গেছে পথে পথে জল, ঢেউ, বাতাসের গান ...
রয়েগেছে ফেরিঘাট, মগ্ন
মাস্তুল আর পপিফুলে শেষ অভিজ্ঞান...
[পাব্লো নেরুদার Twenty Love Poems
And A Song Of Despair এর ফরাসী সংস্করনের নেরুদা
লিখিত গদ্য-ভূমিকার পদ্যানুসরন]