প্রবেশিকা

ভিড়েই রয়েছি মিশে, নিজবেশে, তাই চিনতে পারছেনা কেউ। এ'ই স্বাভাবিক। ম্যাজিক-মাহাত্ম্য ছাড়া, ম্যাজিক-মাহাত্ম্যের মূলে অন্ধকার টুপি আর ঝোলা কোট ছাড়া, কে হে আমি? কে’বা আমি? কিভাবে ভিড়কে বলি ইন্দুরে কেটেছে টুপি, লাল-নীল রুমালের ঝাঁক উড়ে গেছে পায়রা, কাক হয়ে...

Saturday, July 20, 2013

বয়ঃসন্ধি বই





বয়ঃসন্ধি বই
১।
এসব অক্ষর আমি যদিও লিখেছি কবে গতজন্মে, তবু
বন্দী আমি এতাবৎ সেই দূর সাগরের তীরে
যেখানে বসন্ত রাতে কবিতারা ছায়ার শরীরে
আমাকে নিয়েছে ডেকে – দেখিয়েছে তারার প্রপাত –
আমাকে রয়েছে ঘিরে অদ্যাবধি সে বাতাস
সে আকাশ, সেইসব তারা আর রাত ...

সদ্য কিশোর হওয়া সেইসব অক্ষরের চোখে
চোখ রেখে জেগেছিল যতো নারী, মহিলা, যুবতী –
তাদের ভাসিয়ে নিয়ে চলেগেছে নদী ...
যেসব বাহুর স্পর্শে উচ্চকিত এসব অক্ষর -
যে মদির ওষ্ঠ গুলি মধ্যপথে আগুনের স্বর -
শুনেছিল – গোধূম বর্ণের যতো নারীর শরীর
যতি চিহ্ন দের মতো করেছিল ভিড় –
তারা সব তাদের সময় সত্য বাস্তবতা নিয়ে
সময়ের চোরাস্রোতে গিয়েছে হারিয়ে ...

তবুও কুয়াশা সেই, ঝঞ্ঝা বিধ্বস্ত সেই সাগর, বন্দর –
অদ্যাবধি ছুঁয়ে আছে কবিতার নাভিকুন্ড, আমার শিকড় ...

২।
সে এক নিদাঘ সন্ধ্যা। আনমনে একা
এসেছি বনের মতো পপির বাগানে।
পপি ফুল – এতো আর – দেখিনাই আগে –
আকাশী, উদাসী নীল, কালো, শাদা, তামাটে, বেগুনী
ফুলের সাম্রাজ্য ঘিরে সাগর,উন্মত্ত, ফুঁসে বৃষের মতন -
বন্দর, ভারাক্রান্ত, বিষনীল পপির বাতাসে ...
যাদের বাগান, তারা, জলেডোবা জাহাজের থেকে
তুলে এনে মনিমুক্তা, হারানো তৈজস
একদা বিক্রি করতো দূরের বাজারে ...
তাদের লুকানো ঐ বাগানে দাঁড়িয়ে
জীবন ও মৃত্যুর মতো
সংশয়ী, শক্তিশালী প্রশ্নমালা নিয়ে
কবিতায় ও ঢেউয়ে আমি
সে প্রথম গিয়েছি হারিয়ে ...

৩।
এসব অক্ষরগুলি জল, ঢেউ, বাতাস আর প্রেমের সন্ততি-
কবিতার দেহ পেয়ে তার সব চলে গেছে নিজ পথে হেঁটে
যেতে যেতে গেয়ে গেছে পথে পথে জল, ঢেউ, বাতাসের গান ...
রয়েগেছে ফেরিঘাট, মগ্ন মাস্তুল আর পপিফুলে শেষ অভিজ্ঞান...

[পাব্‌লো নেরুদার Twenty Love Poems And A Song Of Despair এর ফরাসী সংস্করনের নেরুদা লিখিত গদ্য-ভূমিকার পদ্যানুসরন]





ঘুম ঘর