প্রবেশিকা

ভিড়েই রয়েছি মিশে, নিজবেশে, তাই চিনতে পারছেনা কেউ। এ'ই স্বাভাবিক। ম্যাজিক-মাহাত্ম্য ছাড়া, ম্যাজিক-মাহাত্ম্যের মূলে অন্ধকার টুপি আর ঝোলা কোট ছাড়া, কে হে আমি? কে’বা আমি? কিভাবে ভিড়কে বলি ইন্দুরে কেটেছে টুপি, লাল-নীল রুমালের ঝাঁক উড়ে গেছে পায়রা, কাক হয়ে...

Sunday, July 21, 2013

পাখিরা






পাখিরা

ধূ ধূ বরফ, তপ্ত বালি,
গহন বন, স্তব্ধ বেলাভূমি,
আগুন-পাহাড়, শ্রান্ত নদি-
কাদা, পাথর
দালান, খোড়ো ঘর –
সকল ঘিরে পাখি,
পাখির ঝড় –

ছোট্ট পাখি, বিপুল পাখি, পাখা’ই পাখি, পাখিই পাখি-
স্তব্ধ পাখি, বাচাল পাখি, শব্দ পাখি –
পাখি –
পাখির ঝড় –

উড়ছে, পুড়ছে, থামছে, নামছে –
আকাশের দেহ ডানায় ছিঁড়ছে
রক্তের মতো আঁধারে ঝরছে
মুক্তির ত্রিসীমানায় উড়ছে
বর্শার মতো দ্রুতগতি এই-
জাহাজের মতো ঝিমিয়ে চলছে
পরের মুহুর্তেই –
ছুরি দিয়ে যেন টুকরো করবে
বেবাক আকাশকেই –
যেন পাখিত্বে ভরিয়ে তুলবে
ছায়াপথ, নীহারিকা –

সেই বালকবেলায় একা যেতে যেতে কতো দিন নদীতীরে থম্‌কে দাঁড়িয়েছি
পাখিগান যেন ঊর্ণনাভ জাল –
আমার রক্ত স্পঞ্জের মতো হয়ে শুষে নিয়েছে গান, পাখি, শাখা ও শিকড় –
তারপর পুড়ে গেছে বন –
শেষ বারের মতো কম্পিত হয়েছে শাখা,আমার শোনিতে হাহাকার করেছে শিকড় –
কিন্তু তারপর কদিন না যেতেই
আবার কাঠঠোকরা, আবার সারস, আবার বৃক্ষ, আবার অরণ্য আর অরণ্যের গান –
পরাহত গভীর সুবাস আবার ফিরেছে –
পুনরায় এসেছে পাখিরা, ডালে ডালে আবার উড়েছে, ফিরে গেছে দলে দলে তবু
গাইতে কিংবা উড়তে আমি শিখিনি কখনো –
তাই আমি নিজ প্রয়োজনে নির্মাণ করেছি কিছু পাখি আমার ছায়াকে নিয়ে যারা
উড়ে যাবে রক্ত-মাংস পাখিদের সাথে –
আমার এই পাখি-বই সেই ইচ্ছাপাতা ...যদি আরো ডানা,গান, পালকের দরকার পরে
তাহলে সাহায্য-হাত বাড়াবে নিশ্চিত
উড়ে আসা সংখ্যাতীত রক্ত-মাংস পাখি –

[পাব্‌লো নেরুদার Pajaros এর নেরুদা লিখিত গদ্য-ভূমিকার পদ্যানুসরন]

ঘুম ঘর