পাখিরা
ধূ ধূ বরফ, তপ্ত বালি,
গহন বন, স্তব্ধ বেলাভূমি,
আগুন-পাহাড়, শ্রান্ত
নদি-
কাদা, পাথর
দালান, খোড়ো ঘর –
সকল ঘিরে পাখি,
পাখির ঝড় –
ছোট্ট পাখি, বিপুল
পাখি, পাখা’ই পাখি, পাখিই পাখি-
স্তব্ধ পাখি,
বাচাল পাখি, শব্দ পাখি –
পাখি –
পাখির ঝড় –
উড়ছে, পুড়ছে,
থামছে, নামছে –
আকাশের দেহ ডানায়
ছিঁড়ছে
রক্তের মতো আঁধারে
ঝরছে
মুক্তির
ত্রিসীমানায় উড়ছে
বর্শার মতো
দ্রুতগতি এই-
জাহাজের মতো
ঝিমিয়ে চলছে
পরের মুহুর্তেই –
ছুরি দিয়ে যেন
টুকরো করবে
বেবাক আকাশকেই –
যেন পাখিত্বে
ভরিয়ে তুলবে
ছায়াপথ, নীহারিকা –
সেই বালকবেলায় একা
যেতে যেতে কতো দিন নদীতীরে থম্কে দাঁড়িয়েছি
পাখিগান যেন
ঊর্ণনাভ জাল –
আমার রক্ত
স্পঞ্জের মতো হয়ে শুষে নিয়েছে গান, পাখি, শাখা ও শিকড় –
তারপর পুড়ে গেছে
বন –
শেষ বারের মতো
কম্পিত হয়েছে শাখা,আমার শোনিতে হাহাকার করেছে শিকড় –
কিন্তু তারপর কদিন
না যেতেই
আবার কাঠঠোকরা,
আবার সারস, আবার বৃক্ষ, আবার অরণ্য আর অরণ্যের গান –
পরাহত গভীর সুবাস
আবার ফিরেছে –
পুনরায় এসেছে
পাখিরা, ডালে ডালে আবার উড়েছে, ফিরে গেছে দলে দলে তবু
গাইতে কিংবা উড়তে
আমি শিখিনি কখনো –
তাই আমি নিজ
প্রয়োজনে নির্মাণ করেছি কিছু পাখি আমার ছায়াকে নিয়ে যারা
উড়ে যাবে
রক্ত-মাংস পাখিদের সাথে –
আমার এই পাখি-বই সেই
ইচ্ছাপাতা ...যদি আরো ডানা,গান, পালকের দরকার পরে
তাহলে সাহায্য-হাত
বাড়াবে নিশ্চিত
উড়ে আসা সংখ্যাতীত
রক্ত-মাংস পাখি –
[পাব্লো নেরুদার Pajaros এর নেরুদা লিখিত গদ্য-ভূমিকার পদ্যানুসরন]