হিমান্যাথের ‘টাইম
এন্ড স্পেস্’ থেকে ...
স্পেনের কবি
হিমান্যাথের (Juan Ramón Jiménez ) সঙ্গে প্রথম পরিচয়
ইংরেজি অনুবাদে তাঁর “Platero and I” দিয়ে। পরে,
ক্রমে জ্ঞাত হই তাঁর রবীন্দ্র-অনুরাগ বিষয়ে। শিশিরকুমার দাশ’এর “শাশ্বত মৌচাক” পড়ে
তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর রবীন্দ্র-অনুরাগের বিষয়টি যেমন গভীর ভাবে জানতে পারি আর
সেইসঙ্গে হিমান্যাথ-দম্পতী বিষয়েও যতোটুকু জানতে পারি তা’ই আমাকে বাধ্য করে এঁকে
নিয়ে আরো পড়াশোনা করে দেখতে। এলোমেলো ভাবে তাঁর লেখা ও তাঁর বিষয়ে পড়তে পড়তে জানতে
পারি তাঁর মুক্ত ছন্দে রচিত আত্মজীবনি ‘টাইম্ এন্ড্ স্পেস্’ এর কথা এবং প্রায়
সঙ্গে সঙ্গেই সংগ্রহ করি বইটি।
বইটি সম্পূর্নতঃ
কবিতা ত বটেই তথাপি তার মাঝে মাঝে কিছু কিছু টুকরো যেন ‘কবিতাতর’। সেই কিছু কিছু
টুকরো গুলিকে নিজের ভাষায় প্রকাশই এই রচনাগুলির উদ্দেশ্য। এ’তে হিমান্যাথের মূল রচনা’র ( অর্থাৎ ইংরেজি
অনুবাদ) আধারের স্বাদ পাওয়া যাবেনা। তবে
আধারিতের ইঙ্গিত কিছুদূর মিলবে বৈ’কি।
এখানে ১ম পর্বের
১ম ৩টি অধ্যায়ের কিছু কিছু টুকরোকে ভিত্তি করে যতোটুকু লিখেছি তা’ই আছে। বাকি
অংশগুলো থেকেও, ক্রমে, ‘টুকরো’ সংযোজিত হবে।
এই অনুক্রম আমার
নিজের সাজানো।
১।
যা হারিয়েছি তাতে
সেই ঈশ্বর নেই
যিনি শৈশবের
কেননা যা কিছু আজো
আমার সম্বল
সবই ঈশ্বরের
২।
প্রকৃত কবিতাগুলি
দীর্ঘ নয়, খর্বকায়ও নয় –
দ্বিপদী, ত্রিপদী
কিংবা চতুর্দশপদী নয়, তারা
কবির জীবনহেন
পূর্ণ এক যাত্রা, যার
আরম্ভ ও শেষ আছে
শুধু ...
৩।
সুন্দরের
অবিচ্ছিন্ন স্রোতগ গমনে
পরবর্তী প্রতিখানি
প্রকৃত কবিতা
আরো এক ব্যাখ্যাতীত
জলের কল্লোল -
বহুদূর আপনাতে
পূর্ণ হয়ে তবু
উড়ে যায় ঈশ্বরের
দৈব জন্মক্ষনে
৪।
তোমার শ্যামল চাওয়া
নীরবে নির্মাণ করে
আমার দৃষ্টিকে –
আমার অনিত্য,
নিত্য
বেঁকে যায়
প্রণয়ের নীলাভ
আঁধারে ...
৫।
“It is .. clear that we, the “senoritos”, Antonio Machado,
Federico Garcia Lorca and I will never be
able to sing like the people. We might be able to carry an echo of sympathy and
understanding, but never the substance, the essence the life and death of the
people.”
যতোই নিকটে যাই, তবু
আমাদের ‘বাবু’কন্ঠে কোনোদিন ধ্বনিত হবেনা
হাসন রাজার সুর,
দয়াল চাঁদের কন্ঠ, অথবা লালন –
আমাদের স্বরগুলি
বড়জোর হতেপারে প্রতিধ্বনি, সমব্যথা অথবা মেধার
বিশিষ্ট সন্নিকটে
গিয়েও সতত আমরা অক্ষম ছুঁতে
সেই আলো, সেই
অন্ধকার –
৬।
আমার
চিত্রাঙ্গকনের প্রথম শিক্ষক – অন্যথায় প্রেসের সুদক্ষ কর্মী
সিল্ভেরো - একটি
মহিষ -আলতামিরার ঢঙ্গে এঁকেছিল আর
আমার দেওয়ালে আমি
বহুদিন ঐ ছবি ঝুলিয়ে রেখেছি,
হঠাৎই একদিন আমি
টের পাই কিভাবে জানিনা – এ কোনো ছবিই নয় –
পেস্টালে আঁকা এক
অর্থহীন তুমুল গ্রোটেস্ক্ !
এভাবেই আমরন চলে কতো
শত গ্রোটেস্কের সাথে
আমাদের বসবাস, তবু
অর্থহীন জেনে নিয়ে
ছিঁড়ে ফেলে দিতে
শতাব্দী পেরিয়ে
যেতে থাকে ...
আমার কোঠায় ভরা
যেসব তৈজস
অপরের ঘরে আমি সেসব
দেখেই
অদ্যাবধি ব্যঙ্গ
করে চলেছি তাদের ...
৭।
মালুসিতা নামের
শিশুটি
নেই আজ। একদিন
রাস্তা দিয়ে যেতে
সে আমাকে বলেছিলঃ ‘হুয়ান
রামোন
দেবতা কোথায়?’
‘তুমি’ত জানোই ,
সোনা, কোথায় দেবতা’
আমি এ জবাব দিলে মালুসিতা
বলেঃ
‘সে’ত জানি এখন
কোথায় তিনি।
ঠিক।
এখন যেখানে তিনি তার
আগে
কোথায় ছিলেন?’ ...