প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Friday, September 13, 2013

যুক্তি, তক্কো আর গদাই ও রবি

যুক্তি, তক্কো আর গদাই ও রবি




যুক্তি তক্কের দরকার ছিল কেশব সেনের। যুক্তি তক্কের দরকার ছিল কেশব সেনেদের। পাগলা গদাই’এর ছিলনা। ছিলনা কেননা পাগলা গদাই’র বিশ্বাস ছিল তাঁর নিজের রক্ত মাংসের অস্তিত্বটির মতোই বাস্তব। সে বিশ্বাসের হেতু হতেও পারে স্নায়ুরোগ – হিস্টিরিয়া কিংবা অতিন্দ্রীয় ক্ষমতা। হলেই বা কি আসে যায়? অনেক পরের সময়ের মানুষ, অন্য সভ্যতার অন্য বিশ্বাসের – কাফ্‌কা আর রিল্‌কে  তাঁদের নিজ নিজ অসুস্থতার চিকিৎসা করাতে চাননি কেননা তাঁদের মনে হয়েছিল – কেজানে, ঐ অসুস্থতাই হয়তো তাঁদের সৃজনশীলতার উৎস। - অর্থাৎ তাঁরা তাঁদের জীবনের মূল্যেও থাকতে চেয়েছিলেন সৃষ্টিশীল। সে ভাবেই পাগলা গদাই’ও ছিলেন তাঁর বিশ্বাসের কাছে প্রকৃত নিবেদিত। সেই কারনেই তাঁর কথাগুলি অমৃত, অ-মৃত – ইশ্বর থাকলেও অমৃত না থাকলেও অমৃত। তাই তাঁকে নানা পুঁথি ঘেঁটে ‘সৎকথা – সাধুকথা’ লিখে লিখে প্রবর্তন করতে হয়নি নূতন ধর্ম, সভা করতে হয়নি। কিন্তু রামমোহন রায় থেকে আরম্ভ করে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজনারায়ণ বসু বা
কেশব সেন’কে তা করতে হয়েছে কেননা তাঁদের মর্মের অবিশ্বাস তাঁদের দিয়ে তা করিয়েছে। অথচ সেই অবিশ্বাসকে স্বীকার করে নেওয়ার মতো স্বচ্ছতাও ছিলনা তাঁদের। হ্যাঁ, তাঁদের নানা কাজের ‘বাই প্রোডাক্ট্‌’ হিসাবে কিছু  সামাজিক অগ্রগতি হয়েছে ঠিক। আই ঐ সামাজিক অগ্রগতিটুকুর পথিকৃৎ হওয়ার মূল্যেই তাঁরা স্মরণীয়। তাঁদের ইঁট-কাঠ-সিমেন্টে বানানো ‘বিশ্বাস’, তাঁদের ব্রাহ্ম ধর্ম তাঁদের মতোই ‘সাধনোচিত ধাম’ এ গমন করেছে।
ঐ পাগলা গদাই’এর মতোই আরেক পাগলা’ও কদাপি প্রবৃত্ত হননি রামমোহন-কেশব সেনের মতো বিশ্বাস নিয়ে যুক্তির, তক্কের সভায়। তিনি রবি পাগলা। তিনি জানতেন তিনি পাগল। জানতেন ঐ পাগলামিতেই তাঁর মুক্তি। তাই সভা ডেকে বক্তিমা না করে তিনি গাইলেনঃ
 আমারে  পাড়ায় পাড়ায় খেপিয়ে বেড়ায় কোন্‌ খ্যাপা সে !
     ওরে,    আকাশ জুড়ে মোহন সুরে কী যে বাজে কোন্‌ বাতাসে॥
              গেল রে,  গেল বেলা,  পাগলের  কেমন খেলা–
              ডেকে সে  আকুল করে,  দেয় না ধরা।
     তারে    কানন গিরি খুঁজে ফিরি,   কেঁদে মরি কোন্‌ হুতাশে॥

ঘুম ঘর