“স্মৃতি বিস্মৃতির চেয়ে কিছু বেশী”
আজ এখানে বিষ্টি হলো খুব। তাই ছাতার কথা মনে পড়লো। মনে পড়লো বোতাম টিপে খোলার
ফোল্ডিং ছাতা প্রথম দেখেছিলাম খগেন নামে আমার এক দুঃসম্পর্কের কাকার হাতে। তখন
পাঠশালায় পড়ি। কাকার আড়ালে ছাতাটি বার বার খুলে আর বন্ধ করে যে আনন্দ পেয়েছিলাম সে
আর পাবোনা কোনোদিন।
‘সকল জনম ভরে ও মোর দরদীয়া’ গানটি প্রথম শুনেছিলাম এক বর্ষায়। অশোকতরুর কন্ঠে।
শিলিগুড়ি রেডিও স্টেশন থেকে। চার ব্যাটারীর রেডিওতে। সেই সেই রাত্রে কারেন্ট ছিলনা। বাদ্লার বাতাসে
কেঁপে কেঁপে উঠছিল জানালা দরজা আর গানের সুরে, কথায় কেঁপে কেঁপে উঠছিলাম তেরো
কিংবা চোদ্দ বছর বয়সের আমি। পরে সেই গান শুনেছি অসংখ্যবার। আজো শুনি। তবু সেই
প্রথম শোনার বিস্ময়ের কাছে ফিরে যেতে পারিনা আর।
তোমাকে প্রথ দেখেছিলাম এক শীতের সকালে। হোস্টেলের বাস্ মিস্ করে অনেক রাত্রে
তোমার দাদার সঙ্গে গিয়েছিলাম তোমাদের বাড়িতে। তুমি আর তোমার মা ঘুমিয়ে পরেছিলে
ততোক্ষনে। পরদিন সকালে তোমাকে দেখেছিলাম বারান্দায়। সূতির জামা গায়ে। তারপর বছরের
পর বছর ধরে আমরা দেখলাম পরস্পরকে। দেখতে দেখতে একসঙ্গে পার হয়ে এলাম বহু সুখ
দুঃখের ইতিহাস। আজো সামনে অনেক পথ ... তবু সেই সকালের মতো করে আর দেখিনি তোমাকে।
জানি দেখবোওনা। তবু বিষ্টি এলে সেই প্রথমবার বোতাম টিপে খোলার ফোল্ডিং ছাতা দেখার
বিস্ময়ের স্মৃতির মতো আজো মাঝে মাঝে ফিরে আসে সেই প্রথম দেখার স্মৃতি, প্রথম শোনার
স্মৃতি। ভাবি কি বলবো এই মনেপড়াকে? হারিয়ে যাওয়া না’কি বার বার নতুন করে খুঁজে
পাওয়ার জন্যই এইসব?