প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Thursday, September 12, 2013

একটি অসম্পূর্ণ কথোপকথন





একটি অসম্পূর্ণ কথোপকথন

১।
‘হে বালক, আর কতো আঁধারে তলাবে?
যদিও স্পর্শ করলে
অপবিত্র হবে হাত, তবু
উঠে এসো, হাত ধরো –
আমার মন্দিরে চলো, পাপগুলি ধুয়ে
মন্ত্রবলে শুদ্ধ হও –
আঁধার বহন করে আর
কতো তুমি
পাপে যাবে নুয়ে?’

‘অন্ধকার?
অন্ধকার তুমি কাকে বলো?
লালবাতি রাস্তাগুলি যাদের কিনারে
তোমার আমার মাতা প্রতিদিন
আমাদের অপেক্ষাতে থাকে?
শুঁড়িখানা? যাদের দরজাতে
তোমার আমার পিতা
মহাকালহেন রোজ রাতে
শুষে নিয়ে যাপনের বিষ
তোমাকে বাঁচিয়ে রাখে
ধ্যানে-যোগে আর দুধেভাতে?
আলো?
তোমার ঐ দেবালয় আলো?
যে আলোর ছটা লেগে
দেবতা দেবত্ব ছেড়ে
পাতালে পালালো???
মন্দিরে মূর্তি আছে,
ওঁৎ পেতে আছে যতো
মাংসলোভী হিংস্র পুরোহিত,
আর এক তুমি আছো
চর্ম-নামাবলী গায়ে
মহত্ত্বের সুযোগ সন্ধানী -
তুমুল ঝড়ের রাত্রে পথিক মেয়েকে
আশ্রয় দেওয়ার ছলে
ধর্ষনের চতুর নায়ক –
তোমার মন্দিরে আজো জীবিত রয়েছে শুধু
যুগান্তের সমূহ তক্ষক...’

‘অর্বাচীন, পড়নাই তুমি সেই মহাগ্রন্থ গুলি –
ফলতঃ জানোনা তুমি কিভাবে তোমার মর্মে
বিঁধে যাচ্ছে পাপের অঙ্গুলী...’

‘কোন্‌ মহাগ্রন্থ, ওহে
মৎস্যলোভী
ছদ্ম ধর্মবক?’

‘ধরো  “বেদ”
যা পাঠে মার্জিত হয়
সমুদয় মোহের কুহক...’

‘বেদ? – সে’ত গুহামানবের
‘দাও’ ও ‘বাঁচাও’ বলে
প্রাণভয়ে তুমুল চীৎকার –
অক্ষর-মহিমাবলে
যদিও শিল্পীত –
পাকে পাকে লোভ আর
পরার্থের তরে হাহাকার...’

‘ এই সব কেরেস্তানি কথা
 শিখেছ বলেই পাপ –
 খোয়া গেছে মস্তিষ্কের সকল স্থিরতা –
উপনিষদের কাছে গেছো কি কখনো?’


‘উপনিষদের কাছে
আছে শুধু কবিতার
শ্যামল আশ্রয় –
ছদ্মবেশী হিংস্রতাও আছে –
অর্জুনের মতো বেঁধে ছেঁদে
এদের ঝুলিয়ে রেখে বৃদ্ধ শমী গাছে
তোমরা বেড়াও ঘুড়ে ছদ্মবেশে
আর
সুযোগ পেলেই সেই অস্ত্র নামিয়ে
কুয়াশাতে মারণ-প্রহার...

আলো যদি থাকে তবে
আঁধারের অতলেই থাকে
নির্মীত নীতিকথা ধর্মকথা গুলি
একদিন সমূলে পুড়িয়ে
আমি যাবো আঁধারের ডাকে
যেখানে বেশ্যার ঘরে
প্রদীপের মতো
খদ্দেরের পথ চেয়ে
দেবতা একলা জেগে থাকে’ ...

ঘুম ঘর