নিদ্রাসমুদ্রতীরে এবং অন্যান্য ...
সম্মুখসমরে এসো –
না, আর ছলনা নয়।
বিশ্বরূপ, গীতাভাষ্য নয় –
সম্মুখসমরে এসো – এইবার – প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে।
এবারে নিরস্ত্র করো –
কেড়েনাও অন্তর্গত কবচ কুন্ডল।
ঐ’যে সজ্জিত অশ্ব তাকে বধ করে
মুহুর্তে নিরস্ত কর
এ জন্মের অশ্বমেধ-
রাজসূয় যজ্ঞ-কোলাহল।
যে শিখর সবচেয়ে উঁচু
আমি জানি হাড়েমাংসে তার হাহাকার –
এবারে পরাস্ত কর সেই উচ্চতাকে।
দিগন্তে প্রকাশ কর
উচ্চতর সূঁচের পাহাড় …
শুধু পিপীলিকা নয়
অক্ষৌহিণী সৈন্যদল
ক্লান্ত আজ বিজয়ের দগ্ধ ধ্বজা বয়ে –
না, আর ছলনা নয়
বিশ্বরূপ, গীতাভাষ্য নয় –
সম্মুখসমরে এসো – এইবার – প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে।
কোনো একটি বৈকুন্ঠ বা নরকের দিকে ...
“ছেঁড়া ছাতা রাজছত্র মিলে চলেগেছে এক বৈকুন্ঠের দিকে...”
কিনু গোয়ালার গলী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমার অক্ষরজাত
রাজছত্র আর ছেঁড়া ছাতা
যাবে কি অন্তিম দৃশ্যে
কোনো একটি বৈকুন্ঠ বা নরকের দিকে?
না’কি তারা নানা অক্ষে, নানা দ্রাঘিমায়
কেবলি ঘুরতে থাকবে
কম্পাস হারিয়ে ফেলা
নাবিকজনের মতো
নক্ষত্রইশারাহীন
সামুদ্রিক
সূচীভেদ্য রাতে? ...
অক্ষরের নগ্ন দেবী
হয়তোবা এ গল্পের শেষটুকু জানে-
নিমিত্তমাত্র “আমি” এতাবৎ জেনেছি শুধুই
আমার এ অক্ষরভেলা
গহনে চেয়েছে যেতে
কোনো একটি বৈকুন্ঠ বা নরকের দিকে ...
নিদ্রাসমুদ্রতীরে
অসম্পূর্ণ পংক্তিগুলি সৈকতে ছড়িয়ে আছে
যুগান্তের ঝিনুকের মতো।
যেন কারো স্নানসিক্ত কেশদাম থেকে
এক বারিবিন্দু পেলে তারা
তখুনি তলিয়ে গিয়ে আমারি গহনে
হয়তো সহস্রজন্ম পেরিয়ে আবারো
ফিরে আসবে মুক্তা নিয়ে, সেই বাক্য নিয়ে
যার খোঁজে বাল্মীকি ও বেদব্যাস থেকে
রামপ্রসাদ, রিল্কে ও হিমান্যাথ হয়ে
এখনো বাউল ফিরছে
পথে পথান্তরে –
কখনো নক্ষত্র কিংবা কখনো প্রদীপ হয়ে-দেখি –
সেই বাক্য জ্বলে থাকে নিদ্রাসমুদ্রতীরে
আমার শিয়রে ...