ডাকঘর
১।।
কার ঠিকানার খোঁজে সকাল দশটার থেকে এ ধূসর গোধূলি অবধি
হে বয়স্ক, নিবিষ্ট পিওন, সুস্পষ্ট ক্লান্ত আপনি
অলিগলিময় এই পাড়ার জঠরে?
প্রতি ধূর্ত্ত বাসিন্দাই অস্বীকার করছে এই খামে লেখা ঠিকানা
ও নাম?
পুরোহিত ও পুলিশ যুগপৎ আড়ালে বলছে ডাকতে
এ চিঠির গোপন
নিলাম?
গোধূলির হে নিবিষ্ট, বয়স্ক পিওন
এ পাড়ার আটটি কুঠুরি আর নয় দরজা ঘুরে দেখা হলে
প্রাপকের চিহ্ন যদি প্রকৃতই না মেলে তাহলে
জানবেন ঘুণাক্ষরে এ পত্রের প্রাপক আমিই –
নাড়তে হবেনা কড়া। আপনার পথ চেয়ে আমার জানালা
খোলা থাকে রাত্রিদিন। তাই কেউ “স্পাই” বলে, কেউ বলে সাজানো পাগল –
আসলে জানেনা এরা আপনি এই সভ্যতার শেষ রাজা আর
আপনার পত্রাকাংখী আমি সেই শেষতম বালক- অমল-
২।।
পৃথিবীর সব অক্ষে, সব দ্রাঘিমায়
প্রাপকের ঠিকানা অথবা
ঠিকানায় প্রাপকের হদিশ না পেয়ে
ফিরে আসে যে সকল পোস্টকার্ড, খাম ও গ্রিটিংস্-
-হে ডাকবিভাগ কর্তা – পৃথিবীর – মহাপৃথিবীর –
প্রত্যাখ্যাত সে সকল পত্র গুলি তুমি
আমাকে পাঠিয়ে দিয়ো – দয়া করে – শেষ ডাকে – প্রতি গোধূলিতে –
সে এক হরকরা কবে মৃত্যুশয্যাশায়ী এক সম্রাটের পত্র নিয়ে একা
– শোনা যায় – অশ্বারোহে নেমেছিল পথে –
পেরোতে পারেনি তবু প্রাসাদের প্রাচীর, সীমানা –
কতো যুগ? নগরের পথে পথে
কাগজে কুড়িয়ে ফেরা
অমল জানেনা...
রবীন্দ্রনাথ ও কাফ্কা স্মরণে...