প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Friday, November 13, 2015

জন্মান্তের আঙিনা অবধি



জন্মান্তের আঙিনা অবধি

(আমার মেয়ে পুগি'কে)

“সে এক বনের ধারে তার মা’র সাথে
থাকতো জটিল নামে  এক ছোটো ছেলে।
জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে
একা হেঁটে পাঠশালায় যেতে
তার খুব ভয় করতো বলে
মা বল্লেনঃ ‘ভয় নেই –
বনে তোর মধুদাদা থাকে।
ভয় পেলে আকূল ডাকিস।
আমি জানি, ঠিক সাড়া দেবে…’ …”

আবহে শীতের রাত্রি।
ঢেউটিনে শিশিরের শব্দ টুপ্‌টাপ।
দরাজ পুকুর থেকে হিম হাওয়া এসে
ধাক্কা দেয় সন্তর্পনে বন্ধ দরজাতে।
পিতামহীপ্রতিম সেই দিদিভাই, বুড়ি,
গল্প বলে যান আর
কাহিনীর প্রতি বাঁকে বিস্ময়ের সাথে
সূচীভেদ্য হয় আরো
পউষের কুয়াশার রাত ...

“জঙ্গলে একা যেতে সত্যি সত্যি পরদিন থেকে
আসে এক মধুদাদা। বাঁশি হাতে। জটিলের ডাকে...”
-এবারে কথক অন্য।
শ্রোতাটি যদিও সেই একজনই তবু
মেঘে মেঘে গড়িয়েছে বেলা বহুদূর –
বালক যুবক হয়ে বহুকাল গেরস্থ হয়েছে
দিদিভাইচিতাভস্ম কোন্‌ বহুদূর
কুশিয়ারা নদী হয়ে
মিশেগেছে সে কোন্‌ সাগরে –
প্রবাসী গেরস্থ আজ বিষ্টি বাদ্‌লা দিনে
ঘরে আছে। যায়নাই উপায়ে, আপিসে ...

“তারপর ছোটো সেই দইঘটি থেকে
জটিল যতোই ঢালে বন্ধুদের পাতে
দধি তবু ভরা থাকে
মধুদাদা-দেওয়া সেই ছোটো ভান্ডটিতে...”
শ্রোতাটি যদিও সেই একজনই তবু
কথক এবার তার
সাত-আট বছর বছরের মেয়ে।
সে’ও আজ বিষ্টিদিনে যায়নাই স্কুলে ...
সদ্য পাওয়া গল্পবই থেকে
সদ্যপড়া গল্পকথা গুলি
সে তার বাবাকে আজ
একে একে বলে ...

একই গল্প, একই শ্রোতা
তার দুই দিকে
দুজন কথক আর
অন্তরালে বহমান
সময়ের অবিশ্রাম নদী –
মনেহয় এই বুঝি জন্মান্তর তবে
মর্মে একা হেঁটে যাওয়া
জন্মান্তের আঙিনা অবধি ...

ঘুম ঘর