শ্রী অপূর্ব কুমার পালের গ্রহত্যাগ
১।
"এই
রইলো ফোন নাম্বার
মাছ-অলা
বসির আর
তরকারির
বাইঠ্যা-রাজুর।
আমি যাই।
ঐ বাক্সে
স্ক্র-ডাউভার, সেলোটেপ,
টেস্টার
ও হাতুড়িটা আছে।
আমি যাই।
গ্যাস-বই,
প্রেসক্রিপশন, তোমার মায়ের,
দু নম্বর
তাকে আছে, বাঁ দিকের কোনে।
আমি যাই।
তোমাদের
দিবারাত্রি ঘিরে
রইলো শুভেচ্ছা,
প্রীতি, মমতা ও স্নেহ।
মায়াটুকু
সঙ্গে নিয়ে শুধু
আমি যাই।
গ্রহান্তরে
যেতে যেতে, থেমে
একবার দেখে
যাবো সেই যখটিকে
যেখানে একদা
গৃহ ছিল
দেখে যাবো
সেখানে সে
গৃহ আর নাই।
তোমাদের
দিবারাত্রি ঘিরে
শত পুষ্প
বিকশিত হোক।
আমি যাই।"
২।
আজ থেকে
ছুটি পাওয়া গেছে।
আজ থেকে
আর তাড়া নাই।
হাসপাতালে
যাওয়া আর
নাই।
নানান রিপোর্ট
নিয়ে, টেস্ট নিয়ে
নানা ডাক্তারের
সাথে
আলোচনা নাই
আর
ত্রাসে ও
বিষাদে।
আজ থেকে
ছুটি পাওয়া গেলো।
অনিচ্ছা
সত্ত্বেও ছুটি
পেয়েছি আমরা
আর
অনিঃশেষ
ছুটি
তুমিওকি
পাওনি আকাশে
আজ থেকে?
৩।
... যেখানেই
যাচ্ছো, ভালো থেকো।
ঘুরে ঘুরে
ক্রমে চিনে নিও
সেখানকার
নদী, মাঠ,
রাস্তাঘাটগুলি।
চিন্তা নেই।
ব্রডগজ চালু হয়েগেছে।
আজ হোক,
কাল হোক, তিন হাজার ত্রিশ সাল হোক,
ঠিক যাবো,
তারাপুর ইস্টিশানে নেমে
কানুকে হুকুম
করবো
"অটো
নিয়ে আয়"।
যেতে যেতে
প্রেমতলায় নেমে
দুই কাপ
চা, দুইজনে, খেয়ে যাবো
মতিলাল মিষ্টান্ন
ভান্ডারে।
ভেবোনা।
আমিও আসবো
অন্যদিন
অন্য কোনো
ট্রেনে ...
[ এইগুলি লিখিত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সালে। অপূর্ব কুমার পাল, যিনি আমার বান্ধব এবং শ্বশুরমশাই ও বটে, তাঁর মৃত্যুর পরদিন। লেখাগুলি খাতাচাপা হয়েছিল বহুদিন। হঠাৎই তারা উঠে এলো তাদের নিজস্ব দাবীতে। তখনই সামান্য অদল বদল করে তুলে রাখলাম লেখাগুলি। ]