১৮ জুন ২০২১ কিংবা গৌতম বসু' দিবসের কবিতা
সপ্তর্ষি বিশ্বাস
আজকের সব
রোদ, সব মেঘ, সব আলো, সব অন্ধকার
ধেয়ে যেতে
চায় তোমাপানে। স্বরবৃত্তে, মাত্রাবৃত্তে
অশ্বারোহী
হাওয়ার আহ্বানে
কখন খুলেছে
দরজা, ভেজানো জানালা,
জেনেছিলে?
কেউ জানে?
জানবে কখনো?
না লেখা
অক্ষরগুলি ঝরাপাতাহেন
কিসের ইশারাহেতু
ফেলে রেখে তুমি
চলেগেলে
নিরক্ষর গানের সন্ধানে ...
ভাবি, শোক
করবোনা, যিনি কবি,
তাঁর জন্য
শোক কি আবার?
তিনি'ত আছেন
আর রোজই তো আসেন
বাদলের মাঠকাটা
জলাশয় ঘুরে
বসে ও জিরিয়ে
নিয়ে
দাগী আকাশের
নিচে
আমাদের ঘরে
। ...
ভাবি, তবে
শোক কেন?
তবু শোক,
শোকের আশ্রয়,
তাঁর কাছে খুঁজি।
২।
'মানুষ'
দরজার মতো। খিড়কিদোর, সিংহদ্বার,
কেউবা তোরণ। প্রহরী পরিবৃত, তবু হঠাৎ-বাতাসে
পাল্লাগুলি
আলগা হয়,আর তোরণ পেরিয়ে
কিছুদূর
যাওয়া যায়, যাওয়া যেতে পারে…
'মানুষ'
দরজার মতো। কোনো দরজা খুলেগেলে
দেখা যায়
নিকোনো আঙ্গিনা। কোনো কোনো দরজা খুলে
ভস্ম, ছাই,
ক্রোধ ও ম্লানিমা। কোনো দরজার পাড়ে
ধুধু মাঠ,
ঘুঘুচড়া ভিটে ও শেয়াল। তিতাস চলেছে তার
প্রান্তরেখা
ছুঁয়ে। কদাচিৎ একটি দুটি
দরজা ফাঁক
হলে
দেখাযায়
চক্রবাল, চক্রবালে মেঘের প্রাসাদ।
তেমনি দুর্লভ
এক দোর খুলে তুমি শান্ত পায়ে হেঁটে যাও, দেখি,
বিন্ধ্যাচল
পার হয়ে পাখিদের ডাকে ঢাকা পথে।
প্রহরীরা স্তম্ভিত চোখে দেখে এই বিরাট গমন।
৩।
যে সকল প্রশ্নশেষে
অনুত্তর ছিলে কিংবা
"আরেকদিন
কথা হবে" – বলে বা না বলে
মাঠটি পেরিয়ে
গেছো
অশ্বারোহে,
অন্যথায় ধীর পায়ে হেঁটে,
সে সকল উত্তর
যদি
আরো কোনো
মর্মে, মেধাতে
থেকে থাকে,
তবে থাক।
তোমার অবর্তমানে
নিরুত্তরই
শ্রেয়।
প্রশ্নশরে
বিদ্ধ তুমি আমার নিরুত্তরে
মিশে থাকো, এভাবে, নীরবে।
৪।
আরো কিছু
কাজ বাকী আছে।
ব্লগের ই-মেইল-লিস্ট
থেকে
আপনার ই-মেইল-আইডি
মুছে ফেলতে
হবে অভিমানে।
এভাবে কি
যেতে হয়
না জানিয়ে
কাউকে কিছুই?
…
আরো কিছু
কাজ বাকী আছে।
আপনার প্রতিটি
ই-চিঠিআবার পড়তে হবে
নিজের সঙ্গে
একা বসে। ‘আবার ভাতের থালা’
হাতে নিয়ে
যেতে হবে অন্নহীন গৃহস্থ-দুয়ারে
শব্দ থেকে
শব মুছেফেলে
'হে নূতন,
দেখা দাও' বলে
যেতে হবে
‘অতিশয় তৃণাংকুর
পথে’।
রচনাকালঃ ১৮ জুন ২০২১ – ১১ জুলাই ২০২১
বেঙ্গালোর