প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Friday, September 9, 2022

ফাঁকি

ফাঁকি

ফাঁকি। সমস্তটাই ফাঁকি। আমার অক্ষরচেষ্টা, তাদের অক্ষর, অক্ষরচেষ্টা। এমন কি তোমারো। তোমারো লিখন ধূলিই হয়েছে ধুলায়। এই ধুলায় এসে মিশেছে, মিশে যাচ্ছে, মুহুর্মুহু, রক্তছিঁটা, খন্ড খন্ড আর্তরব ভাঙ্গতে ভাঙতে ভাঙ্গতে ভাঙতে অবশেষে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে, মিশে যাচ্ছে এই ধূলিতেই যেখানে তোমার আখরগুলি, পুরানো আখরগুলি, গিয়েছে মিশে। রয়েছে মিশে। আর তাই ফাঁকি। সমস্তটাই ফাঁকি। আমার অক্ষরচেষ্টা, তাদের অক্ষর, অক্ষরচেষ্টা। এমন কি তোমারো। তফাৎ শুধু এই, যে, তারা জানেনা আর তুমি জানো। তুমি জানো, যে, ফাগুনের কুসুম-ফোটা হবে ফাঁকি , আমার এই একটি কুঁড়ি রইলে বাকি। আর তাই তুমি এ'ও জানো, যে, একটি নয়, এমনই সংখ্যার অতীত কুঁড়ি ফোটেনি। ফুটবেনা । ঝরে যাবে। ঝরে যাবে অপুষ্টিতে, অনাহারে, বানানো বন্যায়, খরায়, নিতান্ত দিনগত যাপনের পায়ে পায়ে পিষে পিষে। যা থাকবে তা আমাদের, তোমাদের, তোমার ব্যর্থতার কাহন। যা থাকলো তা আমাদের, তোমাদের, তোমার ব্যর্থতার কাহন। এরাই তো মাধবীশাখায় উঠিতেছে দুলি দুলি।তোমার পুরানো আখরগুলি। অতএব ফাঁকি, ফাঁকি ফাগুনের কুসুম-ফোটা। ফাঁকি সৎ-তম, নিভৃততম অক্ষর-চেষ্টাও। আমার কিংবা তাদের। তোমারও। তফাৎ শুধু এই, যে, তুমি জানো অক্ষরচেষ্টা ভিন্ন, গীতিপ্রচেষ্টা ব্যতীত তোমার উপায়ান্তর নেই। তুমি টের পাও এ তোমার ব্যর্থতা। তাই, গেছো, যাও, এখনো, মাঝে মাঝে ও পাড়ার প্রাঙ্গণের ধারে। আজো টের পাও, সেই সেদিনের মতনই,  ভিতরে প্রবেশ করি সে শক্তি ছিলনা একেবারে। আজো নেই। তাই না-ফোটা কুসুমলাশের, কুঁড়িলাশের মুখোমুখি হও না। হও নাই। তাই কুরুক্ষেত্র-গ্যাস-চেম্বার ধর্মক্ষেত্র। তুমি জানো। তফাৎ এতোটুকুই। আর কিছু নয়। ওরা জানেনা। তাই অক্ষরের আত্মরতিকে মনেকরে, ঘোষণা করে কবিত্ব বলে। জানেনা যে ফাঁকি। সমস্তটাই ফাঁকি। ফাগুনের কুসুম-ফোটাও ফাঁকি, ফাঁকিই, 'আমার এই একটি কুঁড়ি রইলে বাকি'। যতো দিন, যতো রাত, যতো সন্ধ্যা , প্রভাত, যুগ ঝরে যাবে একটিও অপুষ্টিতে, অনাহারে, বানানো বন্যায়, খরায়, নিতান্ত দিনগত যাপনের পায়ে পায়ে পিষে পিষে, ততোদিন, অক্ষরচেষ্টা, প্রত্যেকের, ফাঁকি শুধু। ফাঁকিই।

ঘুম ঘর