প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Friday, May 31, 2013

দিনলিপি





৩০-৫-২০১৩


১।       
মনেকরা যাক একটা বিশাল বইএর দোকান। ডাইনে বই, বাঁয়ে বই যেদিকে চোখ যায় শুধু বই আর বই।  তার মধ্যে মন্থর লয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন একজন পাঠক। তাক থেকে ইচ্ছে মতন বই টেনে নিয়ে পাতা উল্টে দেখছেন আবার রেখে দিচ্ছেন তাকে। কবি-লেখক-প্রাবন্ধিকদের কিছু নাম জানা। বেশী অজানাই। এমনি ভাবে পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে হঠাৎই কোনো একটি গ্রন্থে গেলো তাঁর চোখ আটকে। সেটা কবিতা-গদ্য-প্রবন্ধ যা ইচ্ছা হতে পারে। তিনি পড়তে আরম্ভ করলেন ঐখানে দাঁড়িয়েই। পড়তে পড়তে আবার মলাট উল্টে দেখে নিলেন লেখকের নাম। না, চেনা নাম নয়। অর্থাৎ “ভালো লাগতেই হবে, না লাগলে ইন্টেলেক্‌চুয়াল নও’ – তেমন দায় নেই এক্ষেত্রে। তবু ভালো লাগছে। দারুন লাগছে – বইটি কিনে নিয়ে বাড়ি চলেগেলেন ভদ্রলোক আর গিয়েই বসে টানা দুদিন-দুরাতে পড়ে ফেললেন বইটি। তারপর ঐ বইটি তাঁর সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে গেলো... হয়তো পরে জানাগেলো এই বই এর লেখক/লেখিকা কোনো দেশের, কোনো ভাষার অতি নামী কেউ ... হয়তো আগামী তিনশো বছরেও কিচ্ছু জানাই গেলোনা তাঁর বিষয়ে ... হে পাঠক, তেমন বইটি পেলে, তাকে “আধুনিক” না “উত্তরাধুনিক”, “ঈশ্বরের গপ্পো” না “গণিকার দিনলিপি”, এ পড়ে “সমাজ” উচ্ছন্নে যাবে না’কি ঘরে ঘরে যিশু পয়দা হবে – সেইসব সাত পাঁচ না ভেবে তার ছায়ায় এসে দাঁড়ান ...।
হ্যাঁ, ঐ বইটিই আমি লিখতে চাই, চাই পড়তেও  যে বই কেবল নিজের অন্তর্গত অক্ষরের প্রতিভায় অকস্মাৎ সঙ্গী হয়ে ওঠে পাঠকের –



২।
বু.ব, থুড়ি, বুদ্ধদেব বসু এসে বাঙ্গালীকে বল্লেন যে “ওয়েস্টার্ন কন্টেন্ট” ছাড়া নস্য নেওয়াও চলবেনা! রবীন্দ্রনাথ খুঁজে যেখানে যেখানে ‘পশ্চিম’ পাওয়া গেলো সবখানে ঢোকালেন “ওয়েস্ট” নয়তো “ওয়েস্টার্ন”। অর্থাৎ হলো গিয়ে “ওয়েস্টার্ন” স্কুলের আমদানী। এটা বাঙ্গালীর প্রথম আত্মঘাতী গ্যাঁরাকল। অবশ্যই। তারপরে কিত্তিবাস ইত্যাদি নানা রকম ইঁদুরধরা কলের শেষে এলো ‘জটিলতা কল’ বা ‘জটিলতা স্কুল’। হ্যাঁ, বু.ব’র ঐ গ্যাঁরাকলেরি হাত ধরে। বকলমে এরা বল্লো ‘যা জটিল নয় তা শিল্পই নয়’। ফলে সহজ ভাবনা গুলিকে ইচ্ছেকরে পেঁচিয়ে দেওয়ায় যত্নশীল হলেন বঙ্গীয় শিল্পীরা। চল্লো কিছুদিন। তারপরে এলো উল্টো হুজুগ। “ওরিয়েন্টেল কন্টেন্ট”। সরলতা।  ‘পাখি ওড়ে/ আমি দেখি’। আহা! যেন দীব্য দর্শন হলো! – তো স্থাপিত হলো “সরলতা স্কুল”। বানিয়ে বানিয়ে “সরল” লেখার পালা! – সবাই দাশুরায়ের পাঁচালী লিখছে, সবাই দীব্য দর্শন করছে যখন তখন! আহা! – আহা বাঙ্গালী ছিল্পীরা, এরপরে কি আসছে হে?

ঘুম ঘর