দুর্গাটি আর অপুটি
দুর্গা’টি এসেছিল। সঙ্গে ‘অপু’টিও।
দুর্গা’টি বেঁচে উঠেছে আমবাগানের ঝড়-ঝাপটা কাটিয়ে। বেঁচে রয়েছে ‘করোনা’ পেরিয়ে
।
তবু সে ছেড়ে গিয়েছে ‘নিশ্চিন্দিপুর’। বিয়ে হয়ে চলে গিয়েছে জয়পুর। পয়লাপুর,
লক্ষ্মীপুরের আশেপাশের গ্রামে ।
এখানে থাকতে তার ছিল লঙ্গাই আর কুশিয়ারা। এখন তার আছে ‘জিরি’ আর ‘চিরি’।
আছে তারও এক ‘দুর্গা’ - তিন বছরের
‘বর্ষা’। কোলে এসেছে ‘অপু’ও। পাঁচ মাস তার বয়স।
দুর্গা’টির নিজের ‘অপু ভাই’ ক্লাস ফোরে পড়া
,দুরন্ত । তবু দিদিকে কাছে পেয়ে যেন মিশে থাকতে চাইছে সতেরো আঠারোর এই ‘দিদিটি’র আঁচলে।
‘সর্বজয়া’টি রান্নাবাড়ার কাজ করতেন
আমাদের বাড়িতে। এই ছোট্ট দুর্গা মার সঙ্গে এসে কখনো ভাই সামলাতো। কখনো তার মাকে করতো
সাহায্য। … সে আজ সাত-আট বছর আগেকার কথা । তখন এই ‘পুজা’ নামে দুর্গাটি ছিল ছিঁচকাঁদুনে।
আদরে ,আহ্লাদে ভোলাতে চেষ্টা করতাম যখনই দেখতাম তার মন খারাপ। … কথাটি মনে রেখেছে সর্বজয়া
আর দুর্গা টিও।
দুর্গাটি শ্বশুরবাড়ি থেকে এসেছে
বাপের বাড়ি । আবার ফিরে যাবে কাল-পরশু ।আজ এসেছিল দেখা করতে। বিকেলে। শীত-বিকালের
ফুরিয়ে আসা আলোয় এদের দেখে কোলের টির গালে আঙুল ছুঁইয়ে আর বড়টিকে মজার কথা বলে, আসলে
সমস্তের আবডালে দেখছিলাম এই হঠাৎ গিন্নি বাণী হয়ে ওঠা খুকিটিকে যাকে শেষবার দেখেছি
বছর ছয়-সাত বছর আগে যখন সে তার কন্যাটির চেয়ে সামান্য বড়।
ভাবছিলাম “অপরাজিত জীবন রহস্য” এভাবেও
আপনাকে প্রকাশ করে , উদযাপন করে …
এরা বাঁচুক ।
এরা ‘টিঁকে থাকা’র গণ্ডি ছেড়ে বেঁচে থাকবার আস্বাদ পাক কোনদিন।
এরাই “রূপসী বাংলা”।
এরাই “পথের পাঁচালী”, “জন ক্রিস্টোফার”।
এরাই “আমার সোনার বাংলা”।
এদেরই জন্য আমি “আমার সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালোবাসি”।
২৯.১২.২০২০
করিমগঞ্জ