প্রবেশিকা

ভিড়েই রয়েছি মিশে, নিজবেশে, তাই চিনতে পারছেনা কেউ। এ'ই স্বাভাবিক। ম্যাজিক-মাহাত্ম্য ছাড়া, ম্যাজিক-মাহাত্ম্যের মূলে অন্ধকার টুপি আর ঝোলা কোট ছাড়া, কে হে আমি? কে’বা আমি? কিভাবে ভিড়কে বলি ইন্দুরে কেটেছে টুপি, লাল-নীল রুমালের ঝাঁক উড়ে গেছে পায়রা, কাক হয়ে...

Saturday, November 1, 2025

আলোর কিচ্ছা

 আলোর কিচ্ছা


“কোথায় আলো”। “আমার আলো

আমার আলো” – রব ওঠে। অন্ধকার 

কূপীলম্ফে, টর্চে, লন্ঠনে কাঁপে, ভাঙ্গে,

টুকরো হতে থাকে। 

একদল ঢুকেছে জঙ্গলে। আরদল, আর আর দল

ক্ষেতে, মাঠে, গঞ্জ-গামী

সদর রাস্তায়।  নটীখাল বেলাজা তার 

বর্ষা-শীৎকারে। তাহলেও ইনাথপুর শ্মশান থেকেও

পষ্ট শোনা যায়– 

“কোথায় আলো”। “আমার আলো

আমার আলো”...।

সাইকেলে মদন, জব্বার

পুলিশ ফাঁড়ির দিকে উড়ে উড়ে 

পেরোয় বাজার কিন্তু 

তারা তো জানেনা 

এইমাত্র আলো আর কলসীখানি তার

থামলো মইশাসনে, জংলা আঘাটায়। 

থামলো, তবে দেড় পলক। পরের পলকে আলো 

বেতাইল গঞ্জে চল্লো । তখনই আলোর এই 

আতকা-উধাও কিচ্ছা

জব্বার মদন বলছে ফাঁড়ি-দারোগাকে।

তবে আলো কিছুই শুনছে না। 

বেতাইলের ক্ষেত-ডোবা জলে থাকতে আসা

শিংগী, মাগুর আর সাপ  ব্যাং, গেঁড়ি গুগলী জানে

এবার আলো’কে আর 

ধরাই যাবেনা। এইবার আলো যাবে

সোজা কাটাখালে। ঢোঁড়া- রা গেলোনা তবে 

ছানাপোনা সহ দুয়েকদল শিংগী, মাগুর 

আলোকে এগিয়ে দিলো।  আলো 

চুলের রিবন ফিতা শিংগী, মাগুরদের মেয়েদের দিয়ে 

এখন পৌঁছে গেছে বর্ষা-বরাকে।  

যখন দারোগা এলো 

তখনো বাতাসে “কোথায় আলো”। “আমার আলো

আমার আলো” – রব ঝুলে আছে কুয়াশায়

বাদুড়ের মতো। আরেকবার কেচ্ছা-কথা শুনে

দারোগা নির্দেশ দিলো “একদল পচ্ছিমে যাও, আরেকদল

টিল্লা-ভায়, বামে …”। পচ্ছিমে, পুবে কিংবা

টিলায়, বাদাড়ে, খালে খুঁজে 

কোনো লাভ হবে কিনা আজ অথবা আর কোনোদিনই

এসব তর্ক যুক্তি কেচ্ছা কথা থেকে অনেক অনেক দূরে

কালাইন হাওড়ে

এখন আলোর সঙ্গী নিজের কলসী আর

বোয়াল, রৌ এর যতো 

ছোকরা ছেলেমেয়ে। 


–---


ঘুম ঘর