অশ্বত্থামা
আমাদের ঘুম গুলি কিনে রাজা বাদশা হয়েছে রজনী,
গো সজনি, যে প্রদীপ নিভে গেছে অসময়ে, অপেক্ষার
শেষ না হতেই –
তোমার আঁচল তাকে পুনর্জন্ম দেবে, এই আশা।
অন্যসব তারা গুলি দুঃস্বপ্নের ধারা জলে ধুয়ে
পলি হয়ে জমে আছে অপরের অচেনা উঠানে...
গো রজনি! আমাদের নিদ্রাগুলি ফিরিয়ে দেবেনা যদি
তাহলে অচিরে তা দিয়ে রচনা করো শেষ তারাপথ –
‘ইতি গজ’ আর নয়
এবারে নির্মূল করো নিজ হাতে নিজস্ব কুঠারে –
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন
ভীষ্ম, দ্রোণ, কর্ণ,কৃপ – আরো কতো বধপর্ব শেষে
শান্তি পর্বে জল ঢেলে চিতাগুলি ধুয়ে ফেলা হবে?
কতোগুলি মুখাগ্নির শেষে ধীরপায়ে হেঁটে যাবে
মহাপ্রস্থানের পথে দ্রৌপদী ও সমূহ পান্ডব?
শত্রুনাশে জন্মাবধি অপারগ আমি
তারো চেয়ে ঢের বেশী আত্মঘাতী হলে
সারমেয়, তুমি পথ দেখিয়ে আনবে কি
গোয়েন্দাকে, মধ্যরাতে, এই কৃষ্ণ দ্বীপে?
সূচ্যগ্র মেদিনী নয় আমিতো চেয়েছি শুধু
কবির কৌপীন, শাস্তি –
শেষ দৃশ্যে স্বেচ্ছা নির্বাসন ...
অর্জুন-নিষাদ
শেষ স্বপ্নে পুড়ে গেছে জতুগৃহ, নিষাদ রমনী –
পান্ডব কৌরব মিলে স্বর্গে বেড়াতে গেছে
যুদ্ধ শেষে আমোদের আশে,
নিদ্রাহীন আমরা তবু জেগে আছি আজো
ছদ্মবেশে, জনতার ছায়ায়, আড়ালে –
প্রতিশোধ স্পৃহা নিয়ে বুনন করছি তত্ত্ব, রণনীতি,
মানচিত্র ও গীতা।
‘যুদ্ধের বিকল্প নেই’ এই তথ্য নির্বিকল্প জানাতে
কৌশলে
প্রেরণ করেছি দূত প্রতীকার্থে পাঁচ খানি আর্ত গ্রাম
চেয়ে।
‘যথা ধর্ম তথা জয়’ এবম্বিধ কূট পত্র গান্ধারীর বকলমে
না’ও পাই যদি
আমরা ঝাঁপিয়ে পরবো ধর্মযুদ্ধে, অচিরেই, মাঠে মাঠে
হাটে ও বাজারে –
অপর সমস্ত পর্ব ঠিকই থাকবে তবে
মহাপ্রস্থানের পৃষ্ঠা আগুনে পুড়িয়ে
অভিষেক পর্ব লিখবো নিষাদী মা’এর,
নতজানু হয়ে বলবোঃ ‘এখনো আদেশ করো
যদি আরো প্রতিশোধ বাকি থেকে থাকে
বর্ণাশ্রম ভেঙ্গে তা’ও শেষ করি নিজস্ব শোনিতে ...’
নিষাদী মা’টিকে ফেলে
স্বর্গীয় সুরার লোভে কুকুরের পিছু পিছু আমরা যাবোনা।