প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Thursday, March 10, 2016

যাতায়াত




যাতায়াত

হেঁটে যাচ্ছিলাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পিছু পিছু।

১৮৭৩ ইংরেজিতে এসে
মঞ্চে, নাট্যাভিনয়ে, নারী চরিত্রে
লোম চাঁছা মদ্দদের জায়গায়
মহিলা অভিনেত্রী আনয়নের
সঙ্গত প্রস্তাবটি উঠলে
ক্রুদ্ধ ঈশ্বরচন্দ্র
নাট্য সংশ্রব ছেড়ে
দ্রুত পায়ে চলে গেলেন
মাঠ ঘাট থিয়েটার পাড়া
আর আমাকে পার হয়ে।

কিংকর্তব্য বিমূঢ় আমি
কিছুক্ষণ চিত্রার্পিতবৎ দাঁড়িয়ে থেকে
অতঃপর দেখলাম
বাবু বঙ্কিম চলেছেন পাল্কী চেপে।
দৌড় দিলাম তাঁর পাল্কির পিছনে।
দৌড়তে দৌড়তে ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’, ‘বিষবৃক্ষ’
সবই পার হয়ে গিয়েও ‘আনন্দমঠ’ এ হোঁচট খেয়ে
ছিটকে পড়ে গিয়ে দেখি
সেই ১৮৭৩ ইংরেজি -
১২৮০ বাংলা, বঙ্গদর্শন, আষাঢ় সংখ্যা।
বহুবিবাহের বিপক্ষে বিদ্যাসাগরের দ্বিতীয় গ্রন্থকে
অকুন্ঠিত পদাঘাত করছেন বঙ্কিম।
নিজেকে সামান্য সামলে নিয়ে উঠে দাঁড়াবার আগেই
বঙ্কিমের পাল্কী, বেহারা সবই
দৌড় দিলো
‘সীতারাম’এর বাড়িমুখো।
এইবার শ্রীরামকৃষ্ণের পিছু নিতে গিয়ে দেখি
লক্ষ কোটি স্ত্রীহীন ‘স্বামী’ আর পঙ্গপালের মতো
রাজ্যহীন ‘মহারাজ’দের ভিড়
ঠিক যেমন রবীন্দ্রনাথের পিছনে
বিশ্বভারতী, রবীন্দ্রভারতী, সরকার ও জনতা ইত্যাদি –
তথাপি সবার আড়ালে
মনে মনে
এই দুইজনেরি পিছু পিছু
এতাবৎ হেঁটে যাচ্ছি, যেতে পারছি
বিনা হোঁচটে
কেননা
একজন সততই মর্মে বলে চলেছেন
‘এ মনিহার আমায় নাহি সাজে’
আর অন্যজন বলেছিলেন
‘মা, তুই এই রূপেও আছিস্‌’ –
বলেছিলেন
‘যত মত তত পথ’...

ঘুম ঘর