প্রবেশিকা

**************************
আমি অত্র। আমি তত্র।
অন্যত্র অথবা –
আমার আরম্ভে আমি
নিশীথিনী, প্রভাতসম্ভবা।
**************************


[ পাঠক /পাঠিকার নিজস্ব বানানবিধি প্রযোজ্য ]

Sunday, April 17, 2016

গ্রহান্তর




 ভূমিকা পর্ব

নির্ধারিত ছিলনা কিছুই।
এ স্থানাঙ্ক পার হয়ে ভেসে চলে যাওয়া যেতো
আর গ্রহে, অন্য স্থানাঙ্কেও।
অথবা উল্কাজন্ম নিয়ে স-উল্লাসে
পুড়ে যাওয়া যেতো নীল নগ্ন অন্ধকারে।
তবুও এসেছি দেখো
তোমাদের এ গ্রহেই
তোমাদেরভেক ধরে, তোমাদের মেলায়,বন্দরে -
উদ্‌যাপন করে যাচ্ছি
দিবারাত্রিগুলি, দেখো, তোমাদেরই বানানো নিয়মে…

দুঃখের গহন চিনতে সুখিজন্মঘাট ছেড়ে আঘাটায় গিয়েছি সাঁতারে,
সুখের প্রলাপ শিখতে দুঃখীদের গুপ্তকথাগুলি
লিখেছি ভূর্জপত্রে, শ্লোগানে, দেওয়ালে ...
ঈশ্বরের অন্তর্গত অসারতাটুকু প্রমাণের দৈব প্রয়োজনে
ভস্ম মেখে সাধুসংও সেজেছি কখনো।
কামের চাবুক কিনতে ‘মোহান্ত ও এলোকেশী’ হয়ে
জুটিয়েছি দেবদাসী, মা মাসিমা –
সংখ্যাতীত বয়স্থা বিধবা –
অথচ যাত্রারম্ভে
নির্ধারিত ছিলনা কিছুই।
এ স্থানাঙ্ক পার হয়ে ভেসে চলে যাওয়া যেতো
আর গ্রহে, অন্য স্থানাঙ্কেও।

তবুও এলাম বলে চিনে নিচ্ছি যতোটা সম্ভব
এ গ্রহের সব নদী, সব বিষ, বিশল্যকরণী...
অক্ষরের গর্ভগৃহে হেঁটমুন্ড উর্ধপদ হয়ে
জেনে নিচ্ছি সমূহ যতি ও ছন্দ
কামাতুরা  কবিতার যোনি ...


বসতিপর্ব
গ্রহ ও নক্ষত্রদের এই পাড়াটির
এতাবৎ কোনো স্থির নামই ছিলনা –
অথবা হয়তো ছিল – আমার অন্তর্গত গুহ্য অভিধানে –
সে নামের প্রতিশব্দ ছিলনা কখনো -
-তাই আমি গ্রহ ও নক্ষত্রদের এই পাড়াটিতে এসে
“শ্রীময়ী” – এ নামটি রেখেছি।
তুমি যদি এ পাড়ায় এসে কোনোদিন
মনে করো এই নাম মানায় না তাকে
নির্দ্বিধায় বদ্‌লে দিও।
পত্র লিখে সে বিষয়ে কিছু
জানাতে হবে না কোনো নক্ষত্র বা গ্রহ তারকাকে।

যদি চাও তুমি সব গ্রহ আর নক্ষত্রের নামই
আমূল বদ্‌লে দিয়ে
ভিটেবাড়ি গড়ে নিয়ে
বাস করতে পারো এই নক্ষত্রপাড়াতে।

না, আমার দিকভ্রম হবেনা তথাপি।
কেননা এখনো আমি যে কোনো নদীতে
নিজছায়া দেখে নিয়ে সে গ্রহের নাম
সাতের নামতাহেন বলে দিতে পারি ...

    



শপথপর্ব
এ গ্রহে বসত করে যারা
তাহারা ‘মানুষ’।
এ গ্রহে এলেই যদি তবে
এসো বসি
‘মানুষে’র মতো। মুখোমুখি। ‘
নদীপারে গিয়ে।
সে নদীর স্রোতপ্রায়
সময় বহিয়া যদি যায়
যাক্‌ তবে
ধুয়ে নিয়ে আমাদের পায়ের গোড়ালি ...


কতো যুগ স্পর্শ নেই। চিঠিপত্র নেই।
আলোকবৎসরব্যাপী টেলিগ্রাফ খুঁটি
কবরে ক্রুশের মতো বার্তাহীন, স্বরলিপিহীন
আগ্‌লে আছে ছায়াপথ-
উপদ্রূত জ্যোৎস্না, নীহারিকা –
তারাভস্মে পথ খুঁজছে
অন্ধের যষ্টি সেই শেফালী বালিকা ...

অথচ যাত্রারম্ভে
নির্ধারিত ছিলনা কিছুই।
এ স্থানাঙ্ক পার হয়ে ভেসে চলে যাওয়া যেতো
আর গ্রহে, অন্য স্থানাঙ্কেও।

তবুও এলামই যদি এই গ্রহে, তবে
হারানো সে বালিকার নামে
একটি নক্ষত্রভিটে খুঁজে দিতে হবে ...

ঘুম ঘর