"ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর"
মার্জারশিশুটিকে দেখি। তিন মাস
বয়সের বীর। মা হারানো। রাস্তা থেকে
এনে তেতলার ফ্ল্যাটে
পুনর্বাসন
দিয়েছে আমার ছেলেমেয়ে।
আমাদের ফ্ল্যাটবাড়ি।
অর্থাৎ সিমেন্টের
খোপ-খুপচি, ঝুলন্ত ব্যালকনি,
ঝাঁপ দিলে কিংবা গেলে দরজা খোলা পেলে
বার হয়ে, সমূহ বিপদ তার। আর
'প্রতিবেশী', নগরের এ সকল খোপে, খুপচিতে,
প্রকাশ্যে বিষধর না'ও হয় যদি
তাহলেও বিষ দিয়ে বেড়ালছানাকে
গোপনে হত্যা করতে
সক্ষম সিংহভাগি, তাই
ভাগ্যবান এ মার্জারশিশুর পৃথিবী
দুই বিএইচকে'র এই খোপ,খুপচি,
চিলতে "ব্যালকনি"। কিন্তু সে গত তিন মাসে
জেনেছে যে, দরজাটি খুল্লেই আছে
আরো এক 'অবাক পৃথিবী'। জেনেছে যে
যে'ই যায় ওই দরজা খুলে
সে'ই যায় অবাক-পৃথিবী-পথে,
সে'ই যায় দূরে। হয়তোবা তাই
যেই আসে দরজা পেরিয়ে
মন দিয়ে শুঁকে তারই জুতো।
হয়তো সে ভাবে
সুদূরের ঘ্রাণ কিংবা স্বাদ কিংবা নিভৃত ঠিকানা
লেগে আছে কিংবা লেখা আছে
এ সকল জুতোর শরীরে।
হয়তোবা এই ঘ্রাণে সে'ও
মনে মনে পাড়ি দেয় দূরে....
'অবাক পৃথিবী' পথে ফেরে ঘুরে ঘুরে...
তাকে দেখে কেন মনেপড়ে,
মনেহয় কেন
আমিও কি নই তারই মতো?
যে দূরের দ্বার রুদ্ধ আমারো সম্মুখে
পুঁথির অক্ষরে আর স্বপ্নে আর গানে
আমিও কি প্রকৃত প্রস্তাবে
শুঁকিনা, শুঁকছিনা, প্রকার অন্তরে
সুদূরের আক্ষরিক জুতো?
আহা, যদি দরজাটি ওই
কোনোদিন মুহুর্তের তরে
খোলা পাওয়া যেতো...